বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » ২০১৮ সালের মধ্যেই পদ্মা সেতুটি যানবাহনের জন্য খুলবে

২০১৮ সালের মধ্যেই পদ্মা সেতুটি যানবাহনের জন্য খুলবে 

 নিজস্ব প্রতিবেদকঃ    বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু নির্মাণে শুরু হয়ে গেছে বিশাল কর্মযজ্ঞের। ২০১৮ সালের মধ্যেই সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দিতে চায় সরকার। এই লক্ষ্যে এখন ব্যস্ততা পদ্মাপাড়ের মাওয়া ও জাজিরা পয়েন্ট এলাকায়। কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করে যাচ্ছেন।শুধু মাওয়া নয়, পদ্মা সেতুর কাজ হচ্ছে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতেও। জার্মানি, চীন ও সিঙ্গাপুরে সেতুর সরঞ্জাম তৈরির কাজ চলছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তিন ধাপে বৃহৎ এই সেতুর নির্মাণ সম্পন্ন হবে। এখন চলছে প্রথম ধাপের কাজ

padma

নির্মাণ প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানি লিমিটেড পদ্মাপাড়ে নির্মাণ করেছে বিশাল ইয়ার্ড। সেখান থেকে সেতুর কাজ পরিচালনা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পদ্মাপাড়ে নিয়ে আসা হয়েছে ভারী সব যন্ত্রপাতি। বিভিন্ন কাজ চলছে পদ্মার দুই পাড় জুড়েই। মূল সেতুর নির্মাণ শুরুর আগে প্রাথমিক সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার পাশাপাশি চলছে নদীশাসনের কাজ। এগোচ্ছে সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজও।
পদ্মা সেতু সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সরাসরি যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ চলছে জোরেশোরে। প্রথম ধাপে মাটি পরীক্ষা বা সয়েল টেস্টের কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। এরপর দ্বিতীয় ধাপে মূলত ১২টি ট্রায়াল পাইলিং বা পরীক্ষামূলক মূল ভিত্তির কাজ করা হবে। এ কাজটির জন্যই মাটি পরীক্ষা চলছে। একই সঙ্গে চ্যানেলও লাগবে। যেসব স্থানে ট্রায়াল পাইলিং বা মূল ভিত্তি হবে সেগুলোয় পানি থাকতে হবে।
এজন্য ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে চ্যানেল করা হচ্ছে। দুটি ট্রায়াল পাইলের মাটি পরীক্ষার কাজ এরই মধ্যে শেষ। ১২টি ট্রায়াল পাইলিং হ্যামারও তৈরি করা হচ্ছে সিঙ্গাপুরে। মাটি পরীক্ষা ও চ্যানেল তৈরির কাজ শেষ হওয়ার আগেই এসব হ্যামার পদ্মাপাড়ে পৌঁছে যাবে।ট্রায়াল পাইলিং বা পরীক্ষামূলক মূল ভিত্তির কাজ শেষ হওয়ার পর পরই শুরু হবে পদ্মা সেতুর মূল পাইলিং বা মূল ভিত্তির কাজ। স্টিলের তৈরি ১০ ফুট ব্যাসার্ধের এই পাইলিং করা হবে হ্যামারের সাহায্যে।
সেতু সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, তিন হাজার টন ওজনের এই হ্যামার তৈরি হচ্ছে জার্মানিতে। তৈরিতে সময় লাগে ১০ মাস। গত মে মাসে এর অর্ডার দেওয়া হয়েছে। তাই ৪ মাসের মধ্যেই এই হ্যামার আসবে পদ্মাপাড়ে। তারপরই শুরু হবে মূল ভিত্তি নির্মাণ। অর্থাৎ সাব-স্ট্রাকচার (পানির নিচের স্ট্রাকচার) তৈরির কাজ। নির্মাণ হবে ৪১টি কলাম। থাকবে ২৪০টি স্টিল পাইল। আর নদীর দুই পাড় মাওয়া ও জাজিরা অংশে থাকবে ২৪টি কংক্রিটের পাইল বা মূল ভিত্তি, যার ওপর দাঁড়িয়ে থাকবে প্রায় সাড়ে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুটি।
এরপর তৃতীয় ধাপে শুরু হবে সেতুর ওপরের মূল কাঠামো তৈরির কাজ। একে বলা হয় সুপার স্ট্রাকচার। তৃতীয় ধাপের এই কাজের জন্য সব যন্ত্রাংশ তৈরি হচ্ছে চীনে। স্টিলের এই যন্ত্রাংশ দিয়ে পদ্মা সেতু কনস্ট্রাকশন এলাকায় তৈরি করা হবে জালি। নাট-বল্টু লাগিয়ে এখানে ফিটিং করা হবে। তারপর বসানো হবে সেতুর ওপরের অংশে।
সূত্র জানায়, চীন থেকে সেতু তৈরির অনেক সরঞ্জামই নিয়ে আসা হয়েছে। এসেছে বড় বড় ড্রেজার-ক্রেন। সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়ক, মাওয়া ও জাজিরা পয়েন্টে নদীশাসনের কাজও শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে যে গতিতে কাজ চলছে, তাতে কোনোরকম প্রতিবন্ধকতা দেখা না দিলে নির্ধারিত সময়ের আগে কাজ শেষ হবে।
পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক (পিডি) সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কাজ পুরোদমে চলছে। বিভিন্ন দেশে তৈরি হওয়া সব ইকুইপমেন্ট যথাসময়ে চলে আসবে। আমরা আশা করি, নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরেই পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া যাবে।’

 

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone