সুচিত্রা সেনের পারলৌকিক ক্রিয়া আজ
বিনোদন ডেস্ক : আজ মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন হবে। সুচিত্রা সেনের বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের বাসভবনে হবে এ অনুষ্ঠান। এই পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পাদন করবেন সুচিত্রা সেনের একমাত্র কন্যা মুনমুন সেন।
বালিগঞ্জের বেদান্ত আবাসনের দুটি ফ্ল্যাট নিয়েছিলেন সুচিত্রা সেন। চতুর্থ তলার ফ্ল্যাট দুটি পাশাপাশি। এর একটিতে থাকতেন সুচিত্রা সেন এবং অন্যটিতে আছেন সুচিত্রার কন্যা মুনমুন সেন। এই ফ্ল্যাটেরই ছাদে প্যান্ডেল তৈরি করে আয়োজন করা হয়েছে পারলৌকিক ক্রিয়ার।
মহানায়িকা সুচিত্রা সেন ১৭ জানুয়ারি সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
এদিকে অন্তরালে যাওয়ার পর থেকেই সুচিত্রার বাড়ির সামনে ভিড় করতেন গুণমুগ্ধরা। শুধু স্বপ্নের নায়িকাকে একবার চোখের দেখা দেখার জন্য। গতকাল রোববার মহানায়িকার মৃত্যুর দুই দিন পরেও ভক্তদের ভিড় করতে দেখা গেল বাড়ির সামনে। তাদের হাতে নানা রকমের ফুলের তোড়া। আগেও সুচিত্রাভক্তরা নানা উপহার নিয়ে আসতেন তাকে দেওয়ার জন্য। কিন্তু কোনো দিনই সেসব উপহার নিরাপত্তার ঘেরাটোপ টপকে তার কাছে পৌঁছাত না। গতকালও ভক্তদের ফুলের তোড়াগুলো সেই বাধা টপকাতে পারল না।
সোমবার মহানায়িকার পারলৌকিক কাজ। তাই বেদান্ত আবাসনের ছাদে শামিয়ানা তৈরির কাজ চলছে। তিন হাজার বর্গফুটের ‘তিন-ডি’ ফ্ল্যাটে চলছে গোছানোর কাজ। বাড়ির সামনে পুলিশের পাহারা। যে ফ্ল্যাটে সুচিত্রা থাকতেন, সেখানে বাইরের কারোরই প্রবেশের অনুমতি মিলছে না। উৎসুক ভক্তদের পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা বাড়ির সামনে রাস্তায় অপেক্ষা করছেন। তবে সুচিত্রা সেন কিংবা তার মেয়ে মুনমুন সেনের ফ্ল্যাটে রোববার টালিউডের বিশেষ কোনো তারকাকে আসতে দেখা যায়নি।
বেদান্ত আবাসনের ভেতরে থেকে যেসব কর্মী বাইরে আসা-যাওয়া করছেন, তারা সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে তেমন কথা বলছেন না। জানা গেছে, পরিবারের পক্ষ থেকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে মহানায়িকাকে নিয়ে আলোচনা না করতে। কিন্তু সংবাদকর্মীদের কি আর চেষ্টার কমতি আছে! তা ছাড়া, ওই বাড়ির দীর্ঘদিনের মালি জয়ন্ত বিসওয়াল কিংবা বিদ্যুৎমিস্ত্রি শ্যামল মণ্ডলদের যে বলার মতো অনেক কিছুই আছে মহানায়িকা সম্পর্কে। অনুরোধ না এড়াতে পেরে দু-এক কথা বললেন তারা।
শ্যামল মণ্ডল জানালেন, মহানায়িকাকে তিনি মা বলে ডাকতেন। অনেকবার কথা হয়েছে। দেখা হলেই তার পরিবারের খোঁজ নিতেন।
মহানায়িকা ক্লিনিকে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই মন ভার ছিল বেদান্ত আবাসনের কর্মীদের। অন্তরালে থাকা সুচিত্রার কাছে মাঝেমধ্যেই ডাক পড়ত তাদের অনেকেরই। যেমন তত্ত্বাবধায়ক রামকৃষ্ণ সাউ, মালি জয়ন্ত বিসওয়াল, নিরঞ্জন বিসওয়াল, মুনমুন সেনের গাড়িচালক অবিনাশ তার কাছাকাছি যেতে পারতেন।
সুচিত্রার ঘরে এখনো আলো জ্বলছে। জানা গেছে, মেয়ে মুনমুনের নির্দেশে গেল শনিবার দুপুরেই সুচিত্রা সেনের ফ্ল্যাটের কেটে যাওয়া কয়েকটি বাল্ব পাল্টে দিয়ে এসেছেন বিদ্যুৎমিস্ত্রি শ্যামল। তিনি জানালেন, ওই দিন থেকে অবিরাম আলো জ্বলছে মহানায়িকা যে ঘরে থাকতেন, সেই ঘরে। তাই নতুন বাল্ব লাগানো হয়েছে।
তবে পারলৌকিক কাজের পর থেকে অন্ধকারে ডুবে যাবে নায়িকার ঘর। সেখানে আলো জ্বালানোর মানুষটি আর নেই।
এদিকে কলকাতা নগরের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোতে সুচিত্রা সেনের বিশাল আকৃতির ছবি স্থাপন করা হয়েছে। শনিবার সেখানে অনেকে মালা দিয়েছেন। গতকালও মহানায়িকার ছবির সামনে ফুল দেওয়া অব্যাহত ছিল ভক্তদের।