বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » মানবতাবিরোধী অপরাধে মীর কাসেম আলীর ফাঁসি

মানবতাবিরোধী অপরাধে মীর কাসেম আলীর ফাঁসি 

নিজস্ব প্রতিবেদক : মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও  দিগন্ত মিডিয়া কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মীর কাসেম আলীর ফাঁসি দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। তার বিরুদ্ধে আনীত ১৪টি অভিযোগের মধ্যে ১১ নং এবং ১২ নং অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার তার বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়।    রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম।

kasem   এটি মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাগুলোর মধ্যে ১১তম রায়। ট্রাইব্যুনাল ঘোষিত মামলাগুলোর মধ্যে মীর কাসেমের মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম সবচেয়ে কম সময়ে শেষ হয়েছে।   রায় ঘোষণার সময় ট্রাইব্যুনালে মীর কাসেমের পক্ষে তার ছেলে ব্যারিস্টার মীর আহমদ বিন কাসেম, আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, শিশির মনির, আসাদ উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।   রাষ্ট্রপক্ষে চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু, প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট জেয়াদ আল মালুম, হায়দার আলী, তুরিন আফরোজ, মোখলেসুর রহমান বাদল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, দেশীয় ও আর্ন্তজাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক, বিশিষ্টজনরা সেখানে  ছিলেন। এজলাস কক্ষে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না।   এর আগে গত বৃহস্পতিবার মীর কাসেমের মামলার রায় ঘোষণার জন্য দিন নির্ধারণ করেন ওই ট্রাইব্যুনাল। গত ৪ মে উভয়পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষামাণ রাখা হয়।     মীর কাসেম আলীর পক্ষে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার তানভীর আহমেদ আল আমিন যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন। এরপর প্রসিকিউশনের পক্ষ হতে পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করা হয়।   এরআগে আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম তার যুক্তি উপস্থাপন করেন। অন্যদিকে, গত ২৭ ও ২৮ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষে জেয়াদ আল মালুম, সুলতান মাহমুদ সীমন ও ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ যুক্তি উপস্থাপন করেন।   যুক্তি উপস্থাপন শেষে প্রসিকিউশন দাবি করেছেন তারা মীর কাসেম আলীর অপরাধ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। এজন্য তার সর্বোচ্চ শাস্তি হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন।   অন্যদিকে, আসামিপক্ষ দাবি করেছেন, মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। প্রসিকিউশন তাদের অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। তারা আশা করছেন তিনি খালাস পাবেন।   গত বছরের ১৬ মে প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুমসহ প্রসিকিউশন টিম ১৪টি অভিযোগে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার বরাবর দাখিল করেন। ২৬ মে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল-১। এরপর মামলাটি ট্রাইব্যুনাল-২ এ স্থানান্তর করা হয়।   মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে আনীত ১৪টি অভিযোগের মধ্যে ১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগ ছাড়া বাকি সব অভিযোগে মানুষকে আটক করে নির্যাতনের বর্ণনা রয়েছে।   ১১ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তর সালের ২৮ নভেম্বর শহীদ জসিমসহ ছয়জনকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।   ১২ নম্বর অভিযোগে বলা হয়, জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ তিনজনকে অপহরণ করে নির্যাতন করা হয়। এরপর সেখান থেকে দুইজনকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হয়।   এ ছাড়া বাকি সবগুলো অভিযোগে মানুষকে আটক করে নির্যাতনের বর্ণনা রয়েছে।   গত বছরের ১৮ নভেম্বর মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ওপেনিং স্টেটমেন্ট উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে বিচার কাজ শুরু হয়। এরপর ১১ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।   গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর মীর কাসেম আলীকে ১৪টি ঘটনায় অভিযুক্ত করে অভিযোগ গঠন করে ট্রাইব্যুনাল।   গত বছরের ৬ মে মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে হত্যা, নারী নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ১৪টি অভিযোগে তদন্ত চূড়ান্ত করে তদন্ত সংস্থা প্রসিকিউশনে প্রতিবেদন জমা দেয়।   ২০১২ সালের ১৭ জুন মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে ওইদিন বিকেলে মতিঝিলের দৈনিক নয়াদিগন্ত কার্যালয়ের (দিগন্ত মিডিয়া কর্পোরেশন) থেকে তাকে গ্রেফতার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone