বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|রবিবার, মে ১৯, ২০২৪
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » ট্রাইব্যুনালে নিজামী

ট্রাইব্যুনালে নিজামী 

mm

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ  একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী রায় উপলক্ষ্যে তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে। তাকে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় রাখা হয়েছে।ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বুধবার সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে তাকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রায় পাঠ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।এদিকে, নিজামীর আইনজীবী তাজুল ইসলাম, সাইফুর রহমানসহ আসামিপক্ষের ৭-৮জন আইনজীবী এবং চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপুসহ রাষ্ট্রপক্ষের তিন-চারজন আইনজীবী ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়েছেন।মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার দশম রায় এটি। আগের নয়টি মামলায় জামায়াতের সাবেক ও বর্তমান আটজন এবং বিএনপির দুই নেতাকে দণ্ডাদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।এর আগে গত ২৪ জুন অসুস্থতার কারণে নিজামীকে আদালতে হাজির না করায় রায় ঘোষণা করেনি ট্রাইব্যুনাল।গত ২৪ মার্চ নিজামীর বিরুদ্ধে মামলার বিচার কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করে মামলাটি যেকোনো দিন রায় (সিএভি) ঘোষণার জন্য রাখে ট্রাইব্যুনাল। নিজামীর মামলাটি একমাত্র মামলা যেটি তিনবার রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখা হয়েছে।নিজামীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, লুট, ধর্ষণ, উস্কানি ও সহায়তা, পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার মতো ১৬টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনায় অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১২ সালের ২৮ মে তার বিচার শুরু হয়।নিজামীর বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ২৬ আগস্ট থেকে গত বছরের ৮ অক্টোবর পর্যন্ত সাক্ষী হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা, অধ্যাপক, সাংবাদিক ও ইতিহাসবিদসহ মোট ২৬ সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাফাই সাক্ষ্য দেন ৪ জন। এরা হলেন—নিজামীর ছেলে মো. নাজিবুর রহমান এবং অ্যাডভোকেট কে এ হামিদুর রহমান, মো. শামসুল আলম ও আবদুস সলাম মুকুল।গত বছর ১৩ নভেম্বর নিজামীর বিরুদ্ধে মামলার বিচার কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করে মামলাটি যেকোনো দিন রায় (সিএভি) ঘোষণার জন্য রেখেছিল ট্রাইব্যুনাল-১ এর তৎকালীন চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেল। এরপর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের চাকরির বয়সসীমা পূর্ণ হওয়ায় গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর অবসর যান তিনি। ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান পদে সুপ্রীমকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমকে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।

mm

নতুন চেয়ারম্যান নিজামীর মামলায় নতুন করে যুক্তি উপস্থাপনের জন্য গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আদেশ দেন। সে অনুয়ায়ী এ মামলায় পুনরায় যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।

২০১০ সালের ২৯ জুন মতিউর রহমান নিজামীকে একটি মামলায় গ্রেফতার করার পর একই বছরের ২ আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

এরপর ২০১১ সালের ১১ ডিসেম্বর জামায়াতের আমিরের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিল করে প্রসিকিউশন। ২০১২ সালের ৯ জানুয়ারি এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল।

দশম রায়

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের মধ্য দিয়ে যুদ্ধাপরাধের বহু প্রতীক্ষিত বিচার শুরু হয়।

০১. প্রথম রায়ে ২০১৩ সালের ২১ জানুয়ারি জামায়াতে ইসলামীর সাবেক রুকন বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির আদেশ হয়।

০২. ৫ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় রায়ে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়, যা প্রত্যাখ্যান করে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান নেয় হাজার হাজার মানুষ।

যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে সেই আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়লে জনতার দাবির মুখে সরকার ট্রাইব্যুনাল আইনে সংশোধন আনে। এর মধ্যে দিয়ে রায়ের বিরুদ্ধে দুই পক্ষেরই আপিলের সমান সুযোগ তৈরি হয়। গত ১৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগ এ মামলার চূড়ান্ত রায়ে কাদের মোল্লাকে প্রাণদণ্ড দেয়।

০৩. ট্রাইব্যুনালের তৃতীয় রায়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসি হলে দলটির ঘাঁটি বলে পরিচিত এলাকাগুলোতে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। সরকারি হিসেবেই পুলিশসহ নিহত হয় ৭০ জনেরও বেশি মানুষ।

০৪. এরপর গত ৯ মে চতুর্থ রায়ে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানকেও মৃত্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল।

০৫. মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র, পরিকল্পনা ও উস্কানির দায়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন জামায়াতের আমির গোলাম আযমকে গত গত ১৫ জুন ৯০ বছরের কারাদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। এটি ছিল ট্রাইব্যুনালের পঞ্চম রায়।

০৬. ষষ্ঠ রায়ে গত ১৭ জুলাই জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকেও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।

০৭. ১ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের সপ্তম রায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও চট্টগ্রামের সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির রায় হয়।

০৮. গত ৯ অক্টোবর বিএনপির সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলীমকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয় আদালত।

০৯. আর বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে একাত্তরের দুই বদর নেতা আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনকে গত ৩ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone