বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|মঙ্গলবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৪
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » খেলা » অসম্ভবকে সম্ভব করেছে বাংলাদেশের মেয়েরা

অসম্ভবকে সম্ভব করেছে বাংলাদেশের মেয়েরা 

স্পোর্টস ডেস্কঃ   অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন মনিকা, মৌসুমী, বিপাশা,  সানজিদা, মাসুরা, আয়শারা। বাংলাদেশ (অনূর্ধ্ব-১৬) ১-০ গোলে জর্ডানকে হারিয়ে চমকে দিয়েছে।
পেনাল্টিতে গোল করলেন সানজিদা আক্তার। বুধবার রাতে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে চীনা রেফারি ওয়াং জিয়ার শেষ বাঁশি বাজার সাথে সাথে বাংলাদেশের মেয়েদের উল্লাস দেখে স্টেডিয়ামের দর্শকরা বাহবা জানিয়েছেন।
এমন একটি অপ্রত্যাশিত জয় উপহার দিয়ে দারুণ খুশি ৭০ মিনিটে পেনাল্টিতে গোল করা সানজিদা আক্তার। খেলা শেষে সংবাদ মাধ্যমের কাছে এসে বলছিলেন, ‘আমি যখন গোলটা করি তখন বাংলাদেশের সব মানুষের কথা আমার মনে হয়েছে।’
bangla
মাঠের ভেতরে বাংলাদেশের মেয়েরা উল্লাস করছেন আর জর্ডানের মেয়েরা ঘাসের উপর বসে পড়লেন। কাঁদতে লাগলেন। একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরেও কাঁদলেন। আবার কেউ সাইড লাইন থেকে উঠে গিয়ে মাঠের খেলোয়াড়দের সান্ত্বনা দিয়ে তুলে নিয়ে আসলেন। এমন চিত্র দেখার কথা ছিল না। এটা ছিল অকল্পনীয়। কারণ জর্ডান অনেক বেশি শক্তিশালী।

বাংলাদেশ দলের কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটনও জর্ডানকে এগিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু কাল মাঠে দেখা গেল অন্য এক বাংলাদেশকে। পুরো ৯০ মিনিট জর্ডানকে ঘোল  খাইয়ে দিয়েছেন মনিকা, কৃষ্ণা, বিপাশা, নারগিস, রাজিয়ারা। দারুণ খেলেছে পুরো দল। একটা টিম হয়ে খেলতে পারলে কতটা ভালো খেলা যায় তার একটা উদাহরণ হয়ে থাকলো বুধবার।বাংলাদেশের মেয়েরা সেভাবে সুযোগ সুবিধা পায় না। দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা এই ফুটবলারদের কাল ম্যাচের আগে কোচ ছোটন টনিক দিয়েছিলেন, ‘ভুলে যাও ওরা কারা। প্রতিপক্ষ কতটা শক্তিশালী কথাটা মাথায় না রেখে দেশের কথা মাথায় তুলে নাও। বাবা মায়ের কথা মাথায় তুলে নাও। ভালো খেলতে হবে। আমরা ছাড় দেবো না।’ টনিকটা কাজে লেগেছে ভালোই।মৌসুমী বলছিলেন, ‘আমরা জেদ ধরেছিলাম গোল করতে পারি না পারি। গোল খাবো না।’বাংলাদেশের এমন খেলা দেখে অবাক হয়েছে জর্ডান। হতাশায় ম্যাচ শেষে দলের তেমন কেউ সংবাদ সম্মেলনে আসেননি। একজন সহকারি মহিলা কোচকে পাঠিয়েছিলেন। প্রথমে বলছিলেন ম্যাচ নিয়ে কোনো মন্তুব্য করবেন না। পরে ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংরেজিতে বললেন, ‘বাংলাদেশের খেলা দেখে আমরা বিষ্মিত হয়েছি। পেনাল্টির সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল।’৬১ মিনিটে স্ট্রাইকার কৃষ্ণা রানীর পরিবর্তে আক্রমণ ভাগে লিপিকে মাঠে নামান কোচ ছোটন। লিপি মাঠে নেমে বল নিয়ে ছুটছিলেন জর্ডানের গোলপোস্টের বুকে। সেখানেই তাকে ফেলে দিলে পেনাল্টি আদায় করেন লিপি।আন্তর্জাতিক ফুটবল র‌্যাংকিংয়ে জর্ডান অনেক উপরে। তার উপর ওরা জার্মানিতে এক সপ্তাহের ট্রেনিংও করে এসেছে। আর বাংলাদেশের মেয়েরা কমলাপুর স্টেডিয়ামে ট্রেনিং করতে গিয়ে অনেক সময় মাঠের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে। অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও জর্ডানের সাথে বাংলাদেশের জয়ের ব্যবধানটা বড় হতেই পারতো। সেটা হলো না শারীরিক অক্ষমতার কারণে। ছিল না ফিনিশার। বল নিয়ে জর্ডানের বক্সের কাছে যেতেই মুখ থুবড়ে পড়তো আক্রমণগুলো। হাঁপিয়ে উঠতেন বিপাশা, রাজিয়া, সানজিদা, কৃষ্ণারা। সেই সুযোগে বল কেড়ে নিতেন জর্ডানের ডিফেন্ডাররা। তারপরও ৯০ মিনিট একই ধারায় খেলে ম্যাচটা জিতে এএফএসির অনূর্ধ্ব-১৬ বি গ্রুপে সামনে পথে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা।কোচ ছোটন খেলা শেষে বলছিলেন, ‘বলতে দ্বিধা নেই। আমি জর্ডানকে সমীহ করি। তবে ম্যাচটা যখন শুরু হয় তখন প্রথম মিনিট থেকে আমার চোখে লেগেছিল আমরা জিতে যেতে পারি। ফিনিশিংয়ে দুর্বলতা ছিল। এই জয়টা শেষ নয়। আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে আমরা আরো ভালো খেলে জিততে চাই।’

 

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone