বহুল প্রতিক্ষীত তিস্তা চুক্তিতে স্বাক্ষার করবেনঃমোদি
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ভারতের নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে সফরের সময় বহুল প্রতিক্ষীত তিস্তা চুক্তিতে স্বাক্ষার করবেন। তার সম্ভাব্য প্রথম বিদেশ সফর হবে বাংলাদেশে।
বৃহস্পতিবার ভারতের বিসনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকা এ খবর দিয়েছে।
প্রতিবেদনে অজ্ঞাত কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড জানিয়েছে, টেলিফোনে হাসিনার সঙ্গে মোদির কথোপকথন চলাকালীন তারা এই বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
ভারতের লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর গত ১৬ মে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করে দেশটির নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচনে বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভ করার সংবাদ পেয়ে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন হাসিনা। এ সময় বাংলাদেশকে দ্বিতীয় বাড়ি হিসেবে বিবেচনার অনুরোধ জানিয়ে তিনি মোদিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম বিদেশ সফরে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানান।
তাদের কথোপকথনের পুরো সময়জুড়ে তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তিই আলোচ্য বিষয় ছিল বলে জানিয়েছে প্রতিবেদনটি। দুই দেশের মধ্যে জোরালো দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য মোদি একটি ‘অর্থবহ এবং বাস্তব’ পদক্ষেপ নেবেন বলে মোদি জানিয়েছেন হাসিনাকে।
ভারতের প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আন্তরিক এবং বাণিজ্যিক সুসম্পর্ক গড়ে তোলার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে তিস্তা চুক্তিকেই মোদি অগ্রাধিকার দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির তীব্র বিরোধিতার কারণে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন প্রগতিশীল ঐক্যজোট ইউপিএ তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারেনি।
যেহেতু মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়েছে এবং ভারতে পানিসম্পদের বিষয়টি সামগ্রিকভাবে দেখভাল করে দেশটির যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার, তাই মমতাকে এই ব্যাপারে অবশ্যই রাজি করাতে হবে মোদির।
বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড জানিয়েছে, অর্থনৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া পশ্চিমবঙ্গকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে আর্থিক সুবিধা প্রদানের প্রস্তাব দেয়ার মাধ্যমে তিস্তা চুক্তির বিষয়ে তাকে রাজি করাতে পারেন মোদি।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন কুমার শামলিংকেও পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে তিস্তার পানি ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্যও রাজি করাতে পারেন মোদি।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নবনির্বাচিত নরেন্দ্র মোদি যখন দেশটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখন থেকেই পবন কুমারের সঙ্গে তার আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
আর তিস্তা নদীর উৎসস্থল পবন কুমারের সিকিম রাজ্য এবং পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার মাধ্যমে নদীটি বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
ভারতের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করলেও তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর করতে ব্যর্থ হন। কিন্তু তিনি ও তার সরকার বারবার বাংলাদেশকে এই বিষয়ে আশ্বস্ত করেছিলেন যে, এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে রাজি করাতে তার সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। –