বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|রবিবার, মে ৫, ২০২৪
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » তৈরি হচ্ছে পদ্মা সেতু, পরিকল্পনা চূড়ান্ত

তৈরি হচ্ছে পদ্মা সেতু, পরিকল্পনা চূড়ান্ত 

satu
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ শেষ পর্যন্ত নিজস্ব অর্থায়নেই তৈরি হচ্ছে পদ্মা সেতু। এ ব্যাপারে পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়ে গেছে। আগামী সাড়ে তিন বছরের মধ্যেই সেতুটি নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। সেতুটি নির্মাণ করবে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড।বড় বড় সেতু নির্মাণের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই চায়না ব্রিজকে কিভাবে টাকা পরিশোধ করতে হবে তাও ঠিক করা হয়েছে। আগামী মাসের প্রথমার্ধের মধ্যে সেতুর কার্যাদেশ দেয়া হবে।এর পরই শুরু হবে মহাকর্মযজ্ঞ মূল সেতুর কাজ।

satu

জানা গেছে, মূল পদ্মা সেতু তৈরি করে দেবে ১২ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের মধ্যে এর নির্মাণকাজ শেষ হবে। তবে ওই অর্থের চার ভাগের তিন ভাগ পরিশোধ করতে হবে বৈদেশিক মুদ্রায়, যা বাংলাদেশের রিজার্ভ থেকে মেটানো হবে। বাকি অর্থ বাংলাদেশি টাকায় পরিশোধ করা যাবে।  মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুষ্ঠেয় সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাব অনুমোদিত হওয়ার কথা। অনুমোদনের পর ক্রয় কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে চীনা কোম্পানিকে পদ্মা সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ দেবে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে।
ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির জন্য তৈরি করা সারসংক্ষেপে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় বলেছে, নির্ধারিত ২৪ এপ্রিলের মধ্যে শুধু চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কম্পানিই আর্থিক প্রস্তাব দিয়েছে।এর আগে কারিগরি প্রস্তাব জমা দেওয়া বাকি দুটি প্রতিষ্ঠান স্যামসাং সিঅ্যান্ডটি করপোরেশন আর্থিক প্রস্তাবের জন্য নির্ধারিত সময়সীমার পর আরো ১০ সপ্তাহ এবং ডায়েলিম-লার্সেন অ্যান্ড টার্বো লিমিটেড (এলঅ্যান্ডটি) ১২ সপ্তাহ সময় বাড়ানোর আবেদন করে। তাদের সময় বাড়ানোর আবেদন গৃহীত না হওয়ায় চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কম্পানি লিমিটেড পদ্মা প্রকল্পের মূল সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ পাচ্ছে। এরই মধ্যে এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় ইতিবাচক মতামত দিয়েছে বলে জানিয়েছেন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রাজধানীর ধানমণ্ডিতে অনুষ্ঠিত যুব মহিলা লীগের আলোচনা সভায় বলেন, ‘তিন সপ্তাহের মধ্যে চায়না মেজর ব্রিজ কম্পানিকে কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হবে। আমরা আশা করি, এই প্রতিষ্ঠানই পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করবে। ২০১৭ সালের শেষের দিকে অথবা ২০১৮ সালের প্রথম দিকে সাড়ে তিন বছরের মধ্যে এর নির্মাণকাজ শেষ হবে।’ যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পে’র মূল সেতু নির্মাণকাজের জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ১৩ হাজার ৮৮৫ কোটি ৮৫ লাখ ৩৮ হাজার ৫৫০ টাকা। আর্থিক প্রস্তাবে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কম্পানি লিমিটেড ১২ হাজার ১৩৩ কোটি ৩৯ লাখ ৩০ হাজার ৬৮২ টাকা ১৫ পয়সায় এ সেতু নির্মাণ করার প্রস্তাব দিয়েছে।
এটি সরকারের প্রাক্কলিত মূল্যের তুলনায় ১২.৬২ শতাংশ কম। তবে এই অর্থের ৭৪.৪০ শতাংশ বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধ করতে হবে; টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ৯ হাজার ২৭ কোটি ২৪ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৭ টাকা। অর্থাৎ প্রতি ৭৮ টাকায় এক ডলার হিসাব করলে এ সেতু নির্মাণে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে পরিশোধ করতে হবে ১১৫ কোটি ৭৩ লাখ ৩৯ হাজার ৩১ ডলার। বাকি তিন হাজার ১০৬ কোটি ১৪ লাখ ৮৬ হাজার ২৫৫ টাকা স্থানীয় মুদ্রা বা বাংলাদেশি টাকায় পরিশোধ করতে হবে। এর পুরোটাই সরকারের তহবিল থেকে সংস্থান করা হবে।
পদ্মা সেতু নির্মাণে বৈদেশিক মুদ্রায় ব্যয় নির্বাহের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ডলার নেওয়ার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে সরকার। জানা গেছে, অগ্রণী ব্যাংক ও সেতু বিভাগের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার জোগান দেবে অগ্রণী ব্যাংক। ব্যাংকটি প্রয়োজনে অন্য ব্যাংক থেকে এমনকি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ডলার নিয়ে ওই ব্যয় নির্বাহ করতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে অগ্রণী ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিশ্চয়তা দিয়েছে।

 

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone