রাজকীয় প্রাসাদ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর ‘দি সামার প্যালেস’

বাগান, কৃত্রিম হ্রদ আর রাজকীয় প্রাসাদের অপূর্ব সমন্বয়ে এক ঐতিহাসিক বাগানের নাম চীনের দি সামার প্যালেস। চীনের বেইজিংয়ে ২০৯ বর্গকিলোমিটার বা ৭২০ একর এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে এই বাগান।
ঐতিহাসিক এই বাগানটির মূল বৈশিষ্ট্য একদিকে লনজিভিটি বা দীর্ঘায়ু পাহাড় আর অন্যদিকে বিপুল জলরাশির কুনমিং হ্রদ। পাহাড়ের সামনের অংশে রাজকীয় প্রাসাদ এবং প্যাভেলিয়ন থাকলেও পেছনের অংশ নীরব এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। বাগানের বিরাট অংশ ২.২ বর্গকিলোমিটার বা ৫৪০ একর এলাকাজুড়ে রয়েছে কৃত্রিম কুনমিং হ্রদ। এই হ্রদের মাটি কেটেই সৃষ্টি করা হয় ৬০ মিটার বা ২০০ ফুট উঁচু পাহাড়। বাগানজুড়ে বিশেষত প্রাসাদ এলাকায় রয়েছে নানা ধরনের ভাস্কর্য।
১৯৯৮ সালের ডিসেম্বর মাসে ইউনেস্কো বাগানটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে। ইউনেস্কোর দৃষ্টিতে এই বাগান চীনা ল্যান্ড স্কেপ ডিজাইনের এক অনন্য নিদর্শন। যেখানে পাহাড়, বিস্তৃত জলরাশি, মানুষের তৈরি প্রাসাদ, প্যাভেলিয়ন, মিলনায়তন, মন্দির, সেতু সব মিলিয়ে এক অপূর্ব ঐকতান সৃষ্টি করেছে। ১১২২ সাল থেকে বিভিন্ন রাজবংশের শাসনামলে পর্যায় ক্রমে এই প্রাসাদ, হ্রদ এবং বাগান গড়ে উঠে। বিভিন্ন যুদ্ধ, অভিযান বিদ্রোহ এবং ক্ষমতার পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই স্থাপনা বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হয় আবার পুনঃনির্মিত হয়। এ বাগানটিকে ঐক্যের বাগান বলেও অভিহিত করা হয়। বাগানের একটি অংশে বসে রাজকীয় অনুভূতি লাভ করা যায়। কারণ এখানে বসেই রাজরানীরা থিয়েটার দেখতেন। আবার অপর অংশে সবুজের সমারোহ আর বিশাল বিশাল গাছের নীরবতা মনে এনে দেয় অনাবিল শান্তি এবং স্নিগ্ধতা। তাই বছরজুড়েই দেশ-বিদেশের পর্যটকদের পদভারে মুগ্ধ থাকে দি সামার প্যালেস। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের একটি বিরাট অংশ বাগান ও লেক দর্শনের পাশাপাশি বাগানের একপাশে স্থাপিত বৌদ্ধ মন্দিরে প্রার্থনায় মত্ত থাকেন।