বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|শনিবার, মে ৪, ২০২৪
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » আগামীকাল দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন

আগামীকাল দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন 

14

আব্দুল মান্নান, ঢাকা : দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আগামীকাল রবিবার। ইতোমধ্যে এ নির্বাচনের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হবে। বিরতি ছাড়াই বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে। এর পরই শুরু হবে ভোট গণনা।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণের জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ভোটের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ব্যালট পেপার, ব্যালটবাক্স, সিল, অমোচনীয় কালিসহ ভোটের সরঞ্জাম নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় পৌঁছে দেয়া হয়েছে। ভোট শান্তিপূর্ণ পরিবেশে হচ্ছে কিনা, তা পর্যবেক্ষণের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচন কমিশনে কন্ট্রোল রুম তৈরি করা হয়েছে। এ কন্ট্রোল রুম থেকে সারাদেশে ভোট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং তাৎক্ষণিকভাবে নির্দেশনা দেয়া হবে বলে জানা গেছে।10
এবারের নির্বাচনে সারাদেশে ৫৯ জেলায় ১৪৭টি আসনে নির্বাচন হবে। এ আসনগুলোতে ১২টি রাজনৈতিক দলের মোট ৩৯০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী রয়েছেন ১২০ জন, জাতীয় পার্টি জেপির ২৭, গণতন্ত্রী পার্টির ১, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির ৬, ওয়ার্কার্স পার্টির ১৬, জাতীয় পার্টির ৬৬, জাসদের ২১, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের ৩, গণফ্রন্টের ১, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ২, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের ১, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) ২২ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ১০৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ ছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় ইতোমধ্যে ১৫৩ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রয়েছেন ১২৭ জন, জাতীয় পার্টি জেপির ১, জাতীয় পার্টির ২০, জাসদের ৩ এবং ওয়ার্কার্স পার্টির ২ জন। এ ছাড়া এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী কোন প্রার্থী না থাকায় ৫ জেলার কোন আসনেই নির্বাচন হবে না। এ সব জেলার মধ্যে রয়েছে রাজবাড়ী, জয়পুরহাট, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও চাঁদপুর। এ সব জেলার ১৫টি সংসদীয় আসনের সব আসনেই আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি ৫৯ জেলায় নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন।
এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী ১২টি দলের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছে। এ ছাড়া জাতীয় পার্টি জেপি বাইসাইকেল, গণতন্ত্রী পার্টি কবুতর, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি কুঁড়েঘর, ওয়ার্কার্স পার্টি হাতুড়ি, জাতীয় পার্টি লাঙ্গল, জাসদের মশাল, তরিকত ফেডারেশন ফুলের মালা, গণফ্রন্ট মাছ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস রিক্সা, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মোমবাতি এবং বিএনএফ টেলিভিশন মার্কা নিয়ে নির্বাচন করছে। তবে ওয়ার্কার্স পার্টি হাতুড়ি প্রতীকে, জাসদ মশাল প্রতীকে এবং তরিকত ফেডারেশন ফুলের মালা নিয়ে নির্বাচন করলেও কয়েকটি আসনে আওয়ামী লীগের আসন ভাগাভাগির কারণে এ সব দলের প্রার্থীরা নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন। এর মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টির ২ জন, জাসদের ১ জন এবং তরিকত ফেডারেশনের ২ জন নৌকা প্রতীকে নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন। বাকিরা দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে আছেন। নির্বাচনে আগের এ তিনটি দলের মধ্যে ১০ প্রার্থীকে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দিতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনে অনুরোধ জানানো হয়।
গত ২৫ নবেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল অনুযায়ী ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয় ৫ ও ৬ ডিসেম্বর। এ ছাড়া প্রত্যাহারের শেষ দিন ধার্য করা হয় ১৩ ডিসেম্বর। তফসিল অনুযায়ী এবারের নির্বাচনে ১১০৭ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। যাচাই-বাছাই শেষে স্থানীয় রিটার্নিং কর্মকর্তা ২০৩ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেন। এ ছাড়া প্রত্যাহারের শেষ দিনে ৩০৪ প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৩ প্রার্থী জয়ী হন।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ১৪৭ আসনে মোট ৪ কোটি ৩৯ লাখ ৩৮ হাজার ৩৮ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ২ কোটি ২০ লাখ ৬ হাজার ৮২৬ জন। নারী ভোটার সংখ্যা ২ কোটি ১৯ লাখ ৩১ হাজার ৯২৮ জন। এ সব এলাকায় ভোটগ্রহণের জন্য ভোটকেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে ১৮ হাজার ২১৩টি আর মোট ভোট কক্ষের সংখ্যা ৯১ হাজার ২১৩টি। রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে ৬১ জনকে। এর মধ্যে ২ জন রয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার এবং বাকি ৫৯ জন জেলা প্রশাসক। সহকারী রিটার্নি কর্মকর্তার সংখ্যা ২৮৭ জন। এ ছাড়া প্রিসাইডিং অফিসার ১৮ হাজার ২০৮, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ৯১ হাজার ২১৩ এবং পোলিং অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ৪২৬ জন।
এ ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানে তদারকির জন্য ২৯৪ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ২২টি নিবন্ধিত দেশীয় সংস্থার প্রতিনিধিরা এবারের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন বলে জানা গেছে। মোট পর্যবেক্ষকের সংখ্যা ১০ হাজার ৩৫৫ জন। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে নির্বাচনে দুর্গম এলাকায় বিশেষ করে পার্বত্য জেলাগুলোতে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের যাতায়াত, নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছানোসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যাতায়াতের জন্য হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ সব কাজের জন্য খাগড়াছড়ি জেলায় ৪টি, বান্দরবান জেলায় ১৩টি এবং রাঙামাটি জেলায় ১৬টি ভোটকেন্দ্রে হেলিকপ্টারের সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
নতুন সাজে নির্বাচন কমিশন ॥ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনকে নতুন সাজে সাজানো হয়েছে। আগামীকালের নির্বাচন সামনে রেখে পুরো কমিশন চত্বরকে সামিয়ানা দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী কমিশন চত্বরে মিডিয়ার জন্য ইতোমধ্যে অস্থায়ী স্টল তৈরি করা হয়েছে। বিভিন্ন টেলিভিশন তাদের অস্থায়ী স্টুডিওর জন্য জায়গাও বরাদ্দ নিয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রিন্টিং এবং অনলাইন সংবাদমাধ্যমও স্টল বরাদ্দ নিয়েছে। মিডিয়াকর্মীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে অস্থায়ী মিডিয়া সেন্টার। যেখানে অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি সুবিধা রয়েছে। নির্বাচনের দিন সকাল থেকে ফল প্রকাশের পর পর্যন্ত মিডিয়ার এই অস্থায়ী স্টলগুলো চালু থাকবে।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone