বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|সোমবার, মে ৬, ২০২৪
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ 

full_1695223745_1398166405

প্রধান প্রতিবেদক : বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি শিল্প শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির সুফল পেতে প্রয়োজনীয় সুপারিশ তৈরির জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার মন্ত্রিসভায় নির্ধারিত আলোচ্য সূচির বাইরে বাড়ি ভাড়ার বিষয়ে আলোচনা শেষে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দিয়েছেন বলে মন্ত্রিসভা সূত্রে জানা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক মন্ত্রী জানান, বাড়ি ভাড়ার বিষয়টি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করেন নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। পরে তার সঙ্গে যোগ দেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু। এই দুই মন্ত্রী তখন বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শ্রমিকদের জন্য বৃদ্ধি করা বেতন কোনো কাজে আসছে না।
কারণ এ বেতন বৃদ্ধির সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে এক শ্রেণির অসাধু বাড়িওয়ালা। তারা কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই ভাড়া বাড়াছে। এ কারণে বেতন বৃদ্ধি খুব একটা কাজে আসছে না।
মন্ত্রীরা জানান, সরকারিভাবে বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯১ প্রণয়ন করা হলেও এ বাড়িভাড়া আইন মানছে না শিল্পাঞ্চল গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, রাজধানী ঢাকা ও এর নিকটবর্তী এলাকা কেরানীগঞ্জ, সাভার ও আশুলিয়াসহ বিভিন্ন জেলা শহরের বাড়িওয়ালারা। এ সময়ে তারা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

শ্রমিকদের বাড়িভাড়া বিষয়ে কয়েকজন মন্ত্রী বলেন, বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনে ভাড়ার রশিদ, বাড়ি ছাড়ার নোটিশসহ বিভিন্ন বিধান রয়েছে। কিন্তু অনেক বাড়িওয়ালা আইন ভেঙে ইচ্ছামতো ভাড়া বাড়ান, যখন-তখন বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দেন, ভাড়াটেকে বাড়ি ভাড়ার রশিদও দেন না। মানেন না চুক্তিরও কোনো বিধি বিধান।

বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯১-এর আওতায় রেন্ট কোর্টের আশ্রয় নিতে পারেন। এ আইনের ৭ ধারা অনুযায়ী, কোনো বাড়ি ভাড়া মানসম্মত ভাড়ার অধিক বৃদ্ধি করা হলে ওই অধিক ভাড়া কোনোভাবেই আদায়যোগ্য হবে না। এ ক্ষেত্রে মানসম্মত ভাড়া বলতে উপযুক্ত ভাড়াকেই বোঝানো হয়েছে।

এ ভাড়া বাড়ির মালিক ও ভাড়টিয়ার মধ্যে আপোসে নির্ধারিত হতে পারে। আবার ঘর ভাড়া নিয়ন্ত্রকও এ ভাড়া নির্ধারণ করতে পারে। ভাড়াটিয়া কর্তৃক ভাড়া পরিশোধ করা হলে বাড়ির মালিক তৎক্ষণাৎ ভাড়া প্রাপ্তির একটি রসিদ বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরমে স্বাক্ষর করে ভাড়াটিয়াকে দেবেন। বাড়ির মালিকও ভাড়ার রসিদের একটি চেকমুড়ি সংরক্ষণ করবেন।

ধারা ১০ এ বলা হয়েছে, ভাড়া দেওয়া বা ভাড়ার মেয়াদ বৃদ্ধি করার কারণে কোনো ব্যক্তি ভাড়ার অতিরিক্তি প্রিমিয়াম, সালামি, জামানত বা অনুরূপ কোনো অর্থ দাবি বা গ্রহণ করার লক্ষ্যে ভাড়াটিয়াকে দেওয়ার জন্য বলতে পারবেন না।

১২ ধারানুযায়ী কোনো ব্যক্তি কোনো বাড়ির আসবাবপত্র ক্রয়ের জন্য শর্ত রাখতে পারবেন না। ১৩ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো বাড়ির মালিক ভাড়াটিয়াকে ভাড়া গ্রহণের লিখিত রসিদ দিতে বাধ্য থাকবেন। এ রসিদ বিধি দ্বারা নির্বাচিত ফরমে স্বাক্ষর করে ভাড়াটিয়াকে দিতে হবে। বাড়ির মালিক ভাড়ার রসিদের একটি চেকমুড়ি সংরক্ষণ করবেন।

এ রসিদ সম্পন্ন করার দায়-দায়িত্ব বাড়িওয়ালার। রসিদ দিতে ব্যর্থ হলে ২৭ ধারানুযায়ী ভাড়াটিয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে আদায়কৃত টাকার দ্বিগুণ অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এ আইনে বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ এবং সমস্যা সমাধানের জন্য সরকার নির্দিষ্ট এলাকার জন্য কোনো ব্যক্তিকে নিয়ন্ত্রক হিসেবে নিয়োগ দিতে পারে। এ নিয়ন্ত্রক কোনো অভিযোগের ভিত্তিতে দরখাস্তের শুনানি করতে পারবেন। প্রয়োজনে বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়ার প্রতি নোটিশ জারি করতে পারবেন। প্রয়োজন হলে কোনো বাড়িতে প্রবেশ ও পরিদর্শনের ক্ষমতা থাকবে নিয়ন্ত্রকের।

১৫ ধারা মতে, নিয়ন্ত্রক বাড়ির মালিক বা ভাড়াটিয়ার আবেদনের ভিত্তিতে বাড়ি ভাড়া এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন, যেন এর বার্ষিক পরিমাণ বাজার মূল্যের ১৫ শতাংশের সমান হয়।

উল্লেখ্য, বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের বিধি বিধান কার্যকর করতে সরকারের প্রতি হাইকোর্ট রুল জারি করেছে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ। ২০১০ সালের ২৫ এপ্রিল হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ রিট আবেদন করে। রিট আবেদনে বলা হয়, বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনে ভাড়ার রসিদ, বাড়ি ছাড়ার নোটিশসহ বিভিন্ন বিধান রয়েছে। কিন্তু অনেক বাড়িওয়ালা আইন ভেঙে ইচ্ছামতো ভাড়া বাড়ান, যখন-তখন বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দেন, ভাড়াটের বাড়ি ভাড়ার রসিদ দেন না।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone