মঞ্জুর হত্যা মামলায় আদালতে এরশাদ
আদালত প্রতিবেদক : মঞ্জুর হত্যা মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে গেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন বিশেষ আদালতে আসেন।
আজ আদালতের নির্দেশে মামলাটির অধিকতর তদন্ত শেষ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন নির্ধারিত রয়েছে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মামলাটির পুনরায় যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপনের ধার্য দিনে মামলাটির অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে সিআইডিকে অধিকতর তদন্ত করে ২২ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আদেশ দেন আদালতের বিচারক খন্দকার হাসান মো. ফিরোজ।
এদিকে অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে সময়ের আবেদন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সংশ্লিষ্ট আদালতের পিপি আসাদুজ্জামান খান রচি। তিনি জানান, তদন্ত শেষ করতে আরো সময়ের প্রয়োজন। তাই আমরা তিনমাস সময়ের আবেদন জানিয়েছি।
আদালতে উপস্থিত রয়েছেন মামলার প্রধান আসামি সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং অপর দুই আসামি মেজর (অব.) কাজী এমদাদুল হক ও লে. কর্নেল (অব.) মোস্তফা কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া।
পাঁচ আসামির মধ্যে হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত আছে মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুল লতিফ ও লে. কর্নেল (অব.) শামসুর রহমান শামসের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম।
উভয়পক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ১০ ফেব্রুয়ারি মামলাটির রায়ের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু আগের বিচারক হোসনে আরা আক্তার বদলি হওয়ায় নতুন বিচারক খন্দকার হাসান মো. ফিরোজ ফের যুক্তিতর্ক শোনার সিদ্ধান্ত নেন। ওই দিন তিনি যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের নতুন দিন ধার্য করেন ২৭ ফেব্রুয়ারি।
হাসান মাহমুদ ফিরোজের আগে গত ১৯ বছরে বিভিন্ন সময়ে ২২ জন বিচারক এ মামলাটিতে বিচারক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৮১ সালের ১ জুন চট্টগ্রামে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়া হত্যার পর মেজর জেনারেল মঞ্জুরকে পুলিশ হেফাজত থেকে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখানেই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর পর ১৯৯৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জেনারেল মঞ্জুরের বড় ভাই ব্যারিস্টার আবুল মনসুর আহমেদ বাদী হয়ে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় এ হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ওই বছরের ১৫ জুলাই আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল কাহহার আকন্দ। এর আগে ১ মার্চ আসামি এমদাদুল হক, ১২ মার্চ মোহাম্মদ আবদুল লতিফ ও শামসুর রহমান এবং ১৮ জুন মোস্তফা কামালকে গ্রেফতার করা হয়। একই বছরের ১১ জুন কারাগারে থাকা এরশাদকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
বর্তমানে আসামিরা সবাই জামিনে রয়েছেন।
মঞ্জুর হত্যা মামলায় মোট ৪৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হওয়ার পর ২০১২ সালের ২ অক্টোবর আত্মপক্ষ সমর্থন করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন এরশাদ। এর সমর্থনে আদালতে লিখিত বক্তব্যও দাখিল করেন তিনি।