আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা কেন : প্রধানমন্ত্রী
এই দেশ এই সময়, ঢাকা : আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা বন্ধ করতে বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষার ফল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবেন, করুন। কিন্তু আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা করা, বাচ্চাদের লেখাপড়া যেন বন্ধ না হয়।”
শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলেনে কোনো বাধা নেই। কিন্তু আন্দোলন যদি আত্মঘাতি হয়, মানুষ হত্যা করাই যদি আন্দোলনের লক্ষ্য হয়- তাহলে তা হবে দুর্ভাগ্যজনক।
“বিএনপি-জামায়াত আন্দোলন করুক। কিন্তু জনগণের বিরুদ্ধে কেন? জনগণ হত্যা করা তো আন্দোলন হলো না।”
বিরোধী দল পাঁচশ থেকে দুই হাজার টাকার বিনিময়ে লোক ভাড়া করে তাদের দিয়ে বোমা মেরে মানুষ হত্যা করছে বলেও অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “তারা ভাড়াটে লোক দিয়ে আন্দোলন করে বোমা মেরে মানুষ হত্যা করে যাচ্ছে।”
বিরোধী দল ‘পরীক্ষার মর্ম’ না বুঝলে কিছু করার নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
“পাবলিক পরীক্ষার সময় হরতাল না দিতে অনুরোধ করেছিলাম। উনি (খালেদা জিয়া) বললেন হরতাল দেবেনই।”
প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও প্রাথমিকের ফল ভালো হওয়ায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।
বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ধরে রাখতে ‘স্কুল ফিডিং কর্মসূচি’সহ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথাও তিনি তুলে ধরেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা শিশুদের জন্য শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছি, তার ফলও পাচ্ছি। ৯৮ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থীর পাস অসাধ্য সাধন।”
এবার প্রাথমিক সমাপনীতে ৯৮.৫৮% এবং ইবতেদায়ীতে ৯৫.৮% শতাংশ শিক্ষার্থীর পাস করেছে। জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও গতবারের তুলনায় বেড়েছে।
সবাই মিলে বাচ্চাদের দিকে নজর দেয়ার কারণেই এতো ভালো ফলাফল বলে মনে করেন শেখ হাসিনা।
“ধর ধর মার মার করে নয়, বাচ্চাদের আদর করে বোঝালে জোর জবরদস্তি করতে হয় না।”
আওয়ামী লীগের বর্তমান সরকারের সময়েই যে স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীদের শাস্তি নিষিদ্ধ করা হয়েছে- সে কথাও তিনি মনে করিয়ে দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার দল আগামীতে ক্ষমতায় এলে প্রাথমিক পরীক্ষা থেকেই কম্পিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করবে।
শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ গণভবনে এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ীর ফলাফল তুলে দেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এবার অস্বাভাবিক পরিস্থিতি, অনিশ্চিয়তা ও হিংস্রতার মধ্যে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে হয়েছে।
বাধা বিপত্তির মধ্যেও এবার ২৪ দিনের মধ্যে ফল ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এবারো সারা দেশে ২ জানুয়ারি বই উৎসব পালন করা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী এই কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন।
আগামী দুই বছরের মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে এবং পাঁচ বছরের মধ্যে উচ্চ শিক্ষায় ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে সমতা অর্জন সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী।