বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|শনিবার, মে ৪, ২০২৪
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » যুক্তরাজ্যের কঠোর ভিসা নীতির পরিকল্পনা

যুক্তরাজ্যের কঠোর ভিসা নীতির পরিকল্পনা 

ছবি সংগৃহীত

যুক্তরাজ্য অভিবাসন রোধে ভিসা নীতিকে আরও কঠোর করার পরিকল্পনা করেছে। গতকাল সোমবার দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি পাঁচ দফার একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। খবর বিবিসির।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মাসে যুক্তরাজ্য সরকারের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, ২০২২ সালে দেশটিতে ৭ লাখ ৪৫ হাজার মানুষ অভিবাসন গ্রহণ করেছে, যেটি যুক্তরাজ্যের অভিবাসন ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এর ফলে উদ্বেগ সৃষ্টি হওয়ায় নতুন এই পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে দেশটির সরকার।

এতে যেসব পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে অভিবাসী দক্ষ কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি। আগে যেখানে তাদের ন্যূনতম বেতন ছিল ২৬ হাজার ২০০ পাউন্ড, এখন সেটি বাড়িয়ে ৩৮ হাজার ৭০০ পাউন্ড নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এই বেতন বৃদ্ধির ফলে গত বছর যে তিন লাখ নতুন অভিবাসী যুক্তরাজ্যে আসার যোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছিলেন, তারা আর আসতে পারবেন না বলে জানাচ্ছেন ক্লেভারলি।

এছাড়া নতুন এই পরিকল্পনায় পারিবারিক ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম আয়ের পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে। ফলে এখন থেকে পারিবারিক ভিসায় যুক্তরাজ্যে যেতে হলে আবেদনকারীর ন্যূনতম আয় থাকতে হবে ৩৮ হাজার ৭০০ পাউন্ড।

সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যথেষ্ট হয়েছে, যুক্তরাজ্যে অভিবাসনের লাগাম টানা প্রয়োজন। অভিবাসন নীতি অবশ্যই স্বচ্ছ, ন্যায্য ও টেকসই হতে হবে।

বছরের পর বছর ধরে দেশটিতে স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ভিসার অপব্যবহার করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

গত মাসে ২০২২ সালের অভিবাসনের তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই দেশটিতে অভিবাসন কমিয়ে আনার ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ও তার সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির সংসদ সদস্যরা।

দেশটিতে অভিবাসীদের সংখ্যায় এমন বৃদ্ধি সুনাক ও ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির জন্য একটি বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। কারণ তারা ২০১০ সাল থেকেই অভিবাসন কমানোর ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে।

এছাড়া ব্রেক্সিট ভোটের পরেও দলটি যুক্তরাজ্যের সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

তবে ২০১৯ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ না করেই অভিবাসীদের সংখ্যা কমানোর প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। তার আগে প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় ডেভিড ক্যামেরন একবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিলেন যে, যুক্তরাজ্যে অভিবাসীর সংখ্যা বছরে এক লাখের নিচে নামিয়ে আনা হবে।

২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে অভিবাসন নীতির বিষয়টি যুক্তরাজ্যে ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। এ অবস্থায় জনমতকে প্রাধান্য দিয়ে যুক্তরাজ্যে অভিবাসনের সংখ্যা কমানোর জন্য যা করা প্রয়োজন তা করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।

নতুন পরিকল্পনায় স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা কর্মীদের পরিবারকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে আসার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।

এছাড়া যেসব কোম্পানি তাদের বর্তমান বেতন কাঠামোর চেয়ে ২০ শতাংশ কম বেতন দিচ্ছে, তারা যেন অভিবাসী শ্রমিকদের আনতে না পারে, সে ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলা হচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশ থেকে যারা যুক্তরাজ্যে পড়তে আসেন, সেই সব শিক্ষার্থীরা যেন ইচ্ছা করলেই তাদের পরিবারের সদস্যদের দেশটিতে আনতে না পারেন, সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

এসব পরিবর্তন আগামী বসন্ত থেকে কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone