বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|শনিবার, মে ১৮, ২০২৪
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » উদ্বোধনে মোদির সময়ের অপেক্ষা

উদ্বোধনে মোদির সময়ের অপেক্ষা 

Untitled-1-samakal-64e651f4ea0fb

নির্ধারিত সময়ের তিন বছর পর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়া আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন উদ্বোধনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সময়ের অপেক্ষায় রয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে রেলপথটি দুই দেশের সরকারপ্রধান উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এদিকে আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা হতে পারে। নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী, তপশিলের পর প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা যাবে না। তাই বিভিন্ন মন্ত্রণালয় অক্টোবরের মধ্যে চলমান প্রকল্পগুলো উদ্বোধনে তোড়জোড় চালাচ্ছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থেকে ভারতের ত্রিপুরার আগরতলা পর্যন্ত রেলপথটির বাংলাদেশ অংশ চালু করতে গতকাল বুধবার রাজধানীর রেলভবনে রেল সচিব ড. হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়। সভা সূত্র জানিয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ভারতের পক্ষ থেকে এখনও উদ্বোধনের সময় না পাওয়ার বিষয়টি জানান। আগামী ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর ভারতের দিল্লিতে জি-২০ সম্মেলন হবে। বাংলাদেশ এই জোটের সদস্য না হলেও প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারত। গত ১৭ মে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন প্রকল্প পরিদর্শন শেষে বলেছিলেন, ‘আশা করছি, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে এই রেল যোগাযোগের উদ্বোধন করবেন।’ আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সূত্র জানায়, ৮ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর নরেন্দ্র মোদির সময় পাওয়া যায়নি। ১১ সেপ্টেম্বর দুপুরের পর সময় পাওয়া যেতে পারে। তবে সময় দেওয়া হবে কিনা, তা এখনও নিশ্চিত করেনি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

রেল সচিব সমকালকে বলেন, ‘রেলপথ চালু করতে কার কী করণীয় তা নির্ধারণে আন্তঃমন্ত্রণালয়   সভা হয়েছে। আগামী ২৭ আগস্ট আরেকটি সভা হবে। ভারতীয় পক্ষের কী কী চাহিদা, তা ঠিক করে পরের দিন প্রকল্প পরিদর্শন করা হবে; টেস্ট রান হবে। প্রধানমন্ত্রীর সফরে তারা (ভারত) একটি স্লট (সময়) বের করবে। উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন। ওই পারের স্লটের অপেক্ষায় রয়েছি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যোগাযোগ করে জানাবে, এটা সম্ভব হবে কিনা।’

২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্প নির্মাণকাজ  উদ্বোধন করেন। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছিল ১৮ মাস। পরে তা পাঁচ দফা বাড়ানো হয়। সর্বশেষ প্রকল্পের মেয়াদ আগামী বছরের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। গত মঙ্গলবার নতুন রেলপথে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর কথা থাকলেও, তা পিছিয়ে যায় কাজ সামান্য বাকি থাকায়। ট্রেন না চললেও ‘গ্যাং কার’ নামে পরিচিত ট্র্যাক কারে আখাউড়ার গঙ্গাসাগর থেকে শিবনগর পর্যন্ত বাংলাদেশ অংশে পৌনে সাত কিলোমিটার এলাকা পরিদর্শন করেন দুই দেশের কর্মকর্তারা।

আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের প্রায় ৯৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে আখাউড়া-আগরতলা পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। দুই দেশের মধ্যে এই পথ চালু হলে আগরতলা থেকে কলকাতার দূরত্ব ১ হাজার ৭০০ কিলোমিটার কমে হবে ৩৫০ কিলোমিটার। ৪৭৭ কোটি টাকার এই প্রকল্পে ভারত অনুদান দিচ্ছে ৪২০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ অংশে পৌনে সাত কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ২৪১ কোটি টাকা।

আরও তিন প্রকল্প

আগামী জাতীয় নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার আগে চালু হবে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ, চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেললাইন এবং খুলনা-মোংলা রেলপথ। রেল সচিব হুমায়ুন কবীর জানান, এই তিন প্রকল্প উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতি চেয়ে সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে। সেগুলো ফেরত আসার পর প্রকল্পগুলো উদ্বোধনের দিনক্ষণ জানা যাবে। ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকায়। ঢাকার কমলাপুর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮৩ কিলোমিটার রেললাইন উদ্বোধনের প্রস্তুতি নিচ্ছে রেল। সচিব জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বরের প্রথম ভাগে উদ্বোধনের জন্য সরকারপ্রধানের কার্যালয়ে সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে। প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ এবারের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিভিন্ন অংশে রেল বাঁধ (এমব্যাংকমেন্ট) এবং পাথর ধুয়ে গেছে। সচিব জানিয়েছেন, এতে উদ্বোধনে সমস্যা হবে না। অক্টোবরের শেষ ভাগে উদ্বোধনের জন্য সরকারপ্রধানের সম্মতি চাওয়া হয়েছে। ৪ হাজার ২৬০ কোটি টাকায় মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে খুলনা পর্যন্ত রেললাইন অক্টোবরের প্রথম ভাগে উদ্বোধনের সময় চেয়ে সারসংক্ষেপ পাঠনো হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেল সচিব। এক যুগ আগে অনুমোদিত এই প্রকল্প ভারতীয় ঋণে (এলওসি) বাস্তবায়ন করা হয়েছে। চার দফা সময় বাড়িয়ে ৬৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়েছে।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone