বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|রবিবার, মে ৫, ২০২৪
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » আর্ন্তজাতিক » ২০২৪ সালের নির্বাচনে বিজেপিকে হারাতে কী করতে হবে

২০২৪ সালের নির্বাচনে বিজেপিকে হারাতে কী করতে হবে 

বিজ্ঞাপন

মোদি, মমতা, কেজরিওয়ালসহ বহু রাজনীতিকের পক্ষে কাজ করে সফল প্রশান্ত কিশোরকে প্রশ্ন করা হয়, ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারানো সম্ভব কি না? তিনি বলেন, ‘সোজা উত্তর, হ্যাঁ।’ এখন রাজনীতির মাঠে যেসব খেলোয়াড় আছে, তাদের দিয়ে সম্ভব কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সম্ভবত না।’

তবে আগামী মাসের বিধানসভার নির্বাচনের ফলাফল দিয়ে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকে বিবেচনা করার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন প্রশান্ত কিশোর। এর আগে হওয়া ভোটের ফলাফল ও পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনে তার কতটা প্রভাব পড়েছে, সেসব তুলে ধরেই তিনি এ ব্যাপারে এমন সতর্ক করেছেন।

প্রশান্ত কিশোর বলেন, এটা খুব সম্ভব যে বিজেপি এ দফায় সবকিছুতে জিতেছে এবং এরপরও ২০২৪ সালের নির্বাচনে হারতে পারে। ২০১২ সালে উত্তর প্রদেশের ভোটে জিতেছিল সমাজবাদী পার্টি (এসপি); উত্তরাখন্ড ও মণিপুরে জিতেছিল কংগ্রেস, পাঞ্জাবে জিতেছিল আকালি দল। এরপরও ২০১৪ সালের ফলাফল ছিল খুব ভিন্ন।

উত্তর প্রদেশ ভারতের সর্ববৃহৎ রাজ্য। এই রাজ্যের নির্বাচনে কোন বিষয়কে বাজি হিসেবে ধরতেন, এর ইঙ্গিত দিয়ে প্রশান্ত কিশোর বলেন, ‘উত্তর প্রদেশে বিজেপিকে হারিয়ে জিততে চাইলে সামাজিক ঘাঁটির পরিসর বাড়ানো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বিরোধীদের সম্মিলিত সামাজিক ঘাঁটি এখন যেটা রয়েছে, সেটা তার চেয়ে অনেক বড় হতে হবে। এটা যাদববিহীন অন্য অগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি) অথবা দলিত বা অগ্রসর শ্রেণিগুলোকে একজোট করার মাধ্যমে করা যেতে পারে।’

২০২৪ সালের নির্বাচনে বিজেপিকে হারানোর কৌশল কেমন হতে হবে, এরও একটি নীলনকশার বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রশান্ত কিশোর। তিনি বলেন, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ওডিশা, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্র প্রদেশ, তামিলনাড়ু ও কেরালায় সব মিলিয়ে আনুমানিক ২০০টি লোকসভা আসন রয়েছে। বিজেপি জনপ্রিয়তার চূড়ায় থাকার সময় এর মধ্যে মাত্র ৫০টির আসনে জিতেছিল। এই ২০০ আসন বাদ দিলে বাকি থাকে ৩৫০টি আসন। এর মধ্যে বেশির ভাগ আসনেই জেতার সামর্থ্য রাখে বিজেপি।

প্রশান্ত কিশোর আরও বলেন, যদি কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, অন্যান্য দল অথবা এসব দল যদি নিজেদের মধ্যে একটি জোট গঠন করে এবং তাদের হাতে থাকা সব শক্তি ও কৌশল কাজে লাগিয়ে এর মধ্য থেকে ১০০ বা ২০০ আসন বের করে আনতে পারে, তাহলে বিরোধীরা ২৫০ থেকে ২৬০ আসনে ধরে রাখতে পারবে।

এ ছাড়া উত্তর ও পশ্চিম ভারত থেকে আরও ১০০টি আসনে জয়ের মাধ্যমে বিজেপিকে হারানো সম্ভব জানিয়ে প্রশান্ত কিশোর বলেন, ‘আমি এমন একটি বিরোধী জোট গঠনে সাহায্য করতে চাই, যেটি ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করতে পারবে।’

প্রশান্ত বলেন, হিন্দুত্ব, উগ্র জাতীয়তাবাদ ও জনকল্যাণের মতো ইস্যুগুলো ব্যবহার করে বিজেপি সমীহ জাগানোর মতো একটি রাজনৈতিক আখ্যান তৈরি করেছে। এগুলোই দলটির শক্তির ভিত্তি। বিজেপিকে হারাতে চাইলে কথিত মহাজোট গঠন ছাড়াও আরও অন্তত দুটি বিষয়ে বিজেপির চেয়ে এগিয়ে যেতে হবে বিরোধীদের।

ভোটে জেতার উপায় বাতলে দিয়ে প্রশান্ত কিশোর বলেন, বিহারে ২০১৫ সাল থেকে কোনো একটি মহাজোট কিন্তু সফল হতে পারেনি। শুধু দল ও তাদের নেতাদের একজোট হওয়াই যথেষ্ট নয়; এ জন্য বিশেষ এক অবস্থান তৈরির জন্য একধরনের আখ্যান থাকা প্রয়োজন এবং একই সঙ্গে নিজেদের সুসংহতও হবে।

ভারতের লোকসভার ৫৪৩টি আসনের মধ্যে প্রায় ২০০ আসনের ইস্যুটিকেও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে তুলে ধরেন প্রশান্ত কিশোর। এসব আসনে মূলত বিজেপি ও কংগ্রেসের দ্বিমুখী লড়াই দেখা যায়। বিজেপি গত দুটি নির্বাচনে এর মধ্যে ৯৫ শতাংশ আসনে জিতেছিল। অর্থাৎ ১৯০ আসনে জিতেছিল বিজেপি; যদিও এসব আসন ছিল দোদুল্যমান। একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে এসব আসনে এগিয়ে যায় বিজেপি এবং শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের থেকে জয় ছিনিয়ে নেয়।

নিজেকে ভোটকুশলীর পরিবর্তে রাজনৈতিক পরামর্শদাতা হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন ৪৫ বছর বয়সী প্রশান্ত কিশোর। তিনি বলেন, যেসব দল ও নেতা বিজেপিকে হারাতে চায়, তাদের টানা ৫ থেকে ১০ বছর ধরে কাজ করতে হবে। এটা পাঁচ মাসে সম্ভব নয়। আবার এটা হতেও পারে, কারণ এটাই তো গণতন্ত্রের শক্তি।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone