বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » খেলা » অনায়াসেই শ্রীলঙ্কাকে হারাল বাংলাদেশ

অনায়াসেই শ্রীলঙ্কাকে হারাল বাংলাদেশ 

তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৩৩ রানের ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। মিরপুরে রান তাড়া করতে নেমে মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে কুপোকাত হয়ে যায় লঙ্কান ব্যাটিং অর্ডার। ১০ ওভারে মাত্র ৩০ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। ছিল ২টি মেডেন ওভারও। লঙ্কানদের ৩০ রানের ওপেনিং জুটির পর প্রথম আঘাত মেহেদী হাসান মিরাজের। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ ধরে গুনালতিকাকে বধ করেন এই অফ স্পিনার। এরপর পাথুম নিশাঙ্কাকে মিড উইকেটে আফিফ হোসেনের তালুবন্দি করেন মোস্তাফিজ। ৪১ রানে ২ উইকেট হারানোর পর কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন কুশল পেরেরা আর কুশল মেন্ডিজ। ৪১ রান যোগ করেন এ দু’জন। কিন্তু জুটি ভেঙে ফেলেন সাকিব আল হাসান। নিজের হাজারতম উইকেট বানান কুশলকে। এরপর মিরাজ একে একে তুলে নেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও আশেন বান্দারাকে। লঙ্কানদের সংগ্রহ যখন ১৪৯ তখন দাসুন শানাকাকে তুলে নেন সাইফউদ্দিন। এরপর বানিন্দু হাসারাঙ্গা ভয় দেখিয়েছিলেন। হাল ছাড়েননি এই স্পিন অলরাউন্ডার। পাল্‌টা আক্রমণ করে বাংলাদেশকে ভয় দেখিয়ে দিয়েছিলেন। ৩৬ বলে মাত্র ৪৭ রান দরকার এমন সমীকরণ সৃষ্টি করেছিলেন। এ অবস্থায় বাংলাদেশের ত্রাতা সাইফউদ্দিন। একবার জীবন পাওয়া হাসারাঙ্গাকে আফিফের ক্যাচ বানালেন ৪৪ তম ওভারের শেষ বলে। এরপর আর বেশিদূর আগাতে পারেনি লঙ্কানরা। ১১ বল বাকি থাকতে শ্রীলঙ্কা অলআউট হয়েছে। ৩৩ রানে প্রথম ম্যাচ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ দল। এরআগে, মুশফিকুর রহিম-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ-তামিম ইকবালের অর্ধশতকে ৬ উইকেটে ২৫৭ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। পরিস্থিতি বিবেচনায় এটিকে ভালোই বলা চলে। কারণ টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় ম্যাচের শুরুতেই দ্রুত উইকেট হারাতে থাকে টাইগাররা। মিরপুরে লঙ্কানদের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে লিটন-মিঠুনদের ব্যর্থতায় ৯৯ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। যদিও অপরপ্রান্তে অধিনায়ক তামিম ইকবাল ঠিকই অর্ধশতক তুলে নিয়েছেন। শুরুতেই উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে দুশ্মন্ত চামিরার বলে খোঁচা দিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন লিটন। তার ক্যাচটি প্রথম স্লিপে দাঁড়িয়ে ধরেছেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা।

লিটনের বিদায়ের পর উইকেটে যান কোয়ারেন্টাইন কাটিয়ে দলে ফেরা সাকিব আল হাসান। তামিম ইকবালকে নিয়ে শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন বাংলাদেশের সেরা অলরাউন্ডার। কিন্তু জুটিটা খুব বেশি বড় হয়নি। ৩৮ রান তোলার পর ভেঙেছে। গুনাতিলকার বলে মাথার ওপর দিয়ে মারতে গিয়ে লং অনে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান সাকিব। ৩৪ বল খেলে ১৫ রান করেছেন ব্যাট হাতে ছন্দ খুঁজতে থাকা সাকিব। দলীয় ৯৯ রানের সময় অর্ধশতক হাঁকিয়ে আউট হয়ে যান বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ৭০ বলে ৫২ রান করেছেন তিনি। আজ অনন্য এক মাইলফলক স্পর্শ করেছেন তামিম। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ১৪ হাজার রানের ক্লাবে ঢুকে পড়েছেন বাংলাদেশ দলের এই ড্যাশিং ওপেনার। প্রথম ওভারেই চার হাঁকিয়ে এই কীর্তিতে নাম লিখিয়েছেন তামিম। রানের খাতা এগিয়ে হাঁকান ক্যারিয়ারের ৫১-তম হাফসেঞ্চুরি। ৬৬ বলে এ অর্ধশতক পূরণ করলেন তিনি। ১ ছক্কা ও ৬ বাউন্ডারিতে অর্ধশতকটি সাজিয়েছেন তিনি। ২৩ তম ওভারে ধনঞ্জয়ার পঞ্চম বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে আউট হন তামিম।এরপরের ওভারেই শূন্য রানে ফিরে যান মোহাম্মদ মিঠুন। ৯৯ রানেই ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সেখান থেকেই ১০৯ রানের জুটি বাঁধেন মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ। ওয়ানডে ক্রিকেটে ৪০-তম ফিফটি তুলে নিয়ে সেঞ্চুরির পথে হাঁটছিলেন মুশফিক। ব্যক্তিগত ৮৪ রান করে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন। মাত্র ১৬ রানের জন্য অষ্টম সেঞ্চুরির দেখা পাননি তিনি। দলীয় ২০৮ রানে আউট হন জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক। মুশফিক আউট হওয়ার পর ৭০-তম বলে ফিফটি পূর্ণ করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ওয়ানডেতে এটা তার ২৪-তম ফিফটি। এর আগে তিনটি সেঞ্চুরি করেছেন বাংলাদেশ দলের এই টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। তবে তিন ফরম্যাটে ৪৪টি ফিফটির পাশাপাশি ৭টি সেঞ্চুরি করেছেন এই অলরাউন্ডার। তবে শেষ দিকে সেভাবে হাত খুলে খেলতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। ৭৬ বলে ৫৪ রান করে ফিরে যান তিনি। ২২ বলে ২৭ রান করে আফিফ ও ৯ বলে ১৩ রান করে সাইফুদ্দিন এরপর রানের চাকা দ্রুত ঘোরানোর চেষ্টা করেন। ম্যাচ শুরু আগে আগেই করোনার ধাক্কা। করোনা পজেটিভ এসেছিল লঙ্কান দলের তিন সদস্য— বোলিং কোচ চামিন্ডা ভাস ও দুই ক্রিকেটার ইসুরু উদানা ও শিরান ফার্নান্দোর। পরে অবশ্য আরেকটি পরীক্ষায় ভাস আর উদানার করোনা নেগেটিভ এলেও শিরান এখনো পজেটিভ। সব মিলিয়ে শঙ্কা জেগেছিল ম্যাচটি হবে কিনা, তা নিয়েই। তবে শেষ পর্যন্ত মাঠে গড়িয়েছে খেলা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৫৭/৬ (মুশফিক ৮৪, মাহমুদউল্লাহ ৫৪, তামিম ৫২,আফিফ ২৭; ডি সিলভা ৩/৪৫)।
শ্রীলঙ্কা: ৪৮.১ ওভারে ২২৪/১০ (হাসারাঙ্গা ৭৪, কুশল পেরেরা ৩০, ইসুরু ২১, গুনাথিলাকা ২১; মিরাজ ৪/৩০, মোস্তাফিজ ৩/৩৪)।
ফল: বাংলাদেশ ৩৩ রানে জয়ী।
ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ: মুশফিকুর রহিম।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone