বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|মঙ্গলবার, মে ৭, ২০২৪
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » আর্ন্তজাতিক » যেভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রিন্স ফিলিপে শেষকৃত্য

যেভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রিন্স ফিলিপে শেষকৃত্য 

212032Cop_kalerkantho_pic_online2

ব্রিটেনের উইণ্ডসর দুর্গে অনুষ্ঠিত হচ্ছে রানি এলিজাবেথের প্রয়াত স্বামী ডিউক অব এডিনবরা প্রিন্স ফিলিপের শেষকৃত্য। উইণ্ডসর দুর্গের প্রাকারের ভেতরেই অবস্থিত সেন্ট জর্জেস চ্যাপেলে তাকে সমাহিত করা হবে। রাজকীয় এই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় শনিবার ব্রিটেনের সময় বিকেল তিনটায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৮)।

গত ৯ এপ্রিল উইণ্ডসর কাসলে প্রিন্স ফিলিপ মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৯৯। জানা গেছে, মৃত্যুর আগে প্রিন্স ফিলিপ ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন যে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতা যেন ন্যূনতম মাত্রায় রাখা হয়। তার মরদেহ সাধারণ জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শায়িত রাখা হয়নি। তবে শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানটি টিভিতে সরাসরি সম্প্রচারিত হচ্ছে।

ইংল্যান্ডে এখন করোনাভাইরাস মহামারি-জনিত যেসব বিধিনিষেধ জারি রয়েছে, তার সাথে সঙ্গতি রেখে এই শেষকৃত্যানুষ্ঠানে মাত্র ৩০ জন অতিথি উপস্থিত থাকছেন এবং তারা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছেন ও মাস্ক পরছেন। অতিথিদের তালিকায় আছেন রানি এলিজাবেথ ও ডিউক অব এডিনবরার পরিবারের সদস্যরা এবং ডিউক অব এডিনবরার তিন জন জার্মান সদস্য। এতে যোগ দেবার জন্য ডিউকের নাতি প্রিন্স হ্যারি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ব্রিটেনে এসেছেন। তবে তার স্ত্রী মেগান সন্তানসম্ভবা থাকার কারণে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেননি।

শেষকৃত্যের শুরুতে ডিউকের মরদেহ উইণ্ডসর দুর্গের প্রাইভেট গির্জা থেকে দুর্গের রাষ্ট্রীয় প্রবেশপথে নিয়ে আসা হয়। এরপর তার মরদেহ একটি জলপাই রঙের ল্যান্ড রোভারে করে উইণ্ডসর দুর্গের ভেতরেই সেন্ট জর্জেস চ্যাপেল নামের গির্জায় নিয়ে যাওয়া হয়। এই বিশেষ ল্যান্ড রোভার গাড়িটিই মরদেহ গাড়ি হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। কারণ প্রিন্স ফিলিপ নিজে এটি অনেক দিন ব্যবহার করেছেন এবং এটিতে যেসব পরিবর্তন আনা হয়েছে তাতেও তিনি নিজে ভূমিকা রেখেছেন।

এর পেছনে ছিলেন রানি ও ডিউকের চার সন্তান প্রিন্স চার্লস, অ্যান্ড্রু, এডওয়ার্ড এবং প্রিন্সেস অ্যান। আরো ছিলেন ডিউকের দুই নাতি প্রিন্স উইলিয়াম ও হ্যারি। সঙ্গে ছিলেন পরিবারের অন্য কিছু সদস্য এবং ডিউকের কর্মচারীবৃন্দ।

উইণ্ডসর দুর্গের ভেতরের ঘাসে আচ্ছাদিত চতুষ্কোণ জায়গাটিতে ডিউকের মরদেহ গাড়িতে ওঠানো হয়। সেখানে এর আগে থেকেই সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো ছিল হাউজহোল্ড ক্যাভালরি, ফুট গার্ড এবং ডিউকের সাথে বিশেষ যোগাযোগ ছিল এমন সেনা ইউনিটের ছোট কয়েকটি দল।

বিকেল পৌনে তিনটায় মূল শোভাযাত্রাটি শুরু হয়। এর শুরুতে ছিল গ্রেনাডিয়ার গার্ড নামে সামরিক বাদকদল। রানি এলিজাবেথ স্বয়ং রাজকীয় বেন্টলি গাড়িতে করে শোভাযাত্রার পেছনে ছিলেন। এসময় দুর্গের ভেতর তোপধ্বনি এবং গির্জার ঘণ্টাধনি করা হয়।

ডিউকের মরদেহ তার মর্যাদাসূচক নিজস্ব পতাকা দিয়ে ঢাকা ছিল – তার ওপর ছিল পুষ্পস্তবক এবং ডিউকের নৌবাহিনীর টুপি ও তরবারি। সেন্ট জর্জেস চ্যাপেলে শোভাযাত্রার সাথে মিলিত হন আর্চবিশপ অব ক্যান্টারবারি – যিনি অ্যাংলিকান চার্চের প্রধান। মূল অনুষ্ঠানে ডিউকের স্মরণে পুরো ব্রিটেন জুড়ে এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়, যা শুরু ও শেষ হয় তোপধ্বনির মধ্যে দিয়ে।

এর পর গির্জার ভেতরে কফিন নিয়ে যাওয়া হয় এবং তা একটি মঞ্চের ওপর রাখা হয়। চারজন সঙ্গীতশিল্পীর একটি দল ডিউকের পছন্দের কয়েকটি গান পরিবেশন করেন। গির্জার আনুষ্ঠানিকতা বা সার্ভিস শেষ হলে ডিউককে সেন্ট জর্জেস চ্যাপেলের রাজকীয় ভল্টে সমাহিত করা হবে।

করোনাভাইরাস সংক্রান্ত স্বাস্থ্যগত বিধিনিষেধের কারণে ব্রিটেনের জনগণকে এই শেষকৃত্যের কোনো অনুষ্ঠানে যোগ না দিতে বলা হয়েছে। এই শেষকৃত্যানুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে ব্রিটেনে জাতীয় শোক পালন শেষ হবে। তবে রাজপরিবার আরো এক সপ্তাহ ধরে শোক পালন করবে এবং তাদের বিভিন্ন অুনুষ্ঠানে যোগ দেবার সময় তারা কালো পোশাক পরবেন।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone