বিদেশির সঙ্গে সম্পর্কে জড়ালে
নিউজ ডেস্ক : বিদেশে নতুন অফিসে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই আপনার বস বললেন, স্থানীয় কোনো সহকর্মী আপনার সঙ্গে ডেট করতে আগ্রহী হতে পারে। বিদেশি হিসেবে অনেক বেশি বেতন পাওয়ার দিকে ইঙ্গিত করেই এ কথা বললেন তিনি। ঘটনাক্রমে এক আকর্ষণীয় তরুণী সহকর্মী আভাসও দিলেন, ছুটির দিনে তাঁর সঙ্গে দেখা হতে পারে এবং আপনারা বেড়াতে যেতে পারেন। আপনি তাঁকে পছন্দ করছেন, সে-ও আপনাকে, কিন্তু মাথায় ঘুরছে বসের সতর্কবাণী। এ অবস্থায় কী করবেন আপনি? বিষয়টি নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি অনলাইন।
এ পরিস্থিতিতে সমস্যা দুটি। প্রথমত, একজন বিদেশি হিসেবে ভিনদেশের জলসীমায় তরি ভাসাতে যাচ্ছেন আপনি এবং বিষয়টি খুব স্পষ্ট নয় যে কোন সাংস্কৃতিক আচার এখানে খাটবে—আপনার দেশের, নাকি স্বাগতিক দেশের? দ্বিতীয়ত, আপনি কর্মক্ষেত্রে রোমান্সে জড়িয়ে পড়তে যাচ্ছেন, যা বরাবরই খুব মুশকিলের, তা সে নিজের বা পরের যে দেশেই হোক।
ভিনদেশি পুরুষ বা নারী যেই হন না কেন, উভয়ের ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য হতে পারে। আর এ অবস্থায় যে কেউই বলবেন, সাবধানে পথ চলুন। কর্মক্ষেত্রে ডেটিং নিয়ে গবেষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কানেক্টিকাটের নিউ হেভেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক অ্যামি নিকোল সালাভাজ্জিও। তিনিও ঠিক এ কথাই বলেছেন। সালভাজ্জিও জানিয়েছেন, ‘অফিসে কে কার সঙ্গে ডেট করছে, তা সবাই আঁঁচ করতে পারে আর বিশেষত একজন ভিনদেশির সঙ্গে স্থানীয় কারও সম্পর্ক আরও বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারে।’
যে দেশে আছেন সে দেশে সহকর্মীর সঙ্গে ডেট করাকে কীভাবে দেখা হয়, তা জানার চেষ্টা করুন। আর তা অবশ্যই অফিসের বাইরে অন্য কোথাও থেকে জানতে হবে। বিদেশিদের আবাসনসহ অন্যান্য সেবা দিয়ে থাকে এমন কোনো প্রতিষ্ঠান বা এমন পরামর্শকদের কাছ থেকেও এ বিষয়ে সহায়তা পেতে পারেন। এবার আপনার নিজের দেশের ব্যবসায়-সংস্কৃতি, কর্মক্ষেত্রের আচার-আচরণের সঙ্গে তা মিলিয়ে নিন। দুয়ের অবস্থান খুব বেশি সাংঘর্ষিক হলে অবশ্যই যেটি বেশি রক্ষণশীল, সে দিকেই অবস্থান করুন।
সহকর্মীদের মধ্যে রোমান্স হলে সব সময়ই এ সন্দেহ করা হয় যে, এ অবস্থায় পাত্র-পাত্রীরা কাজে অমনোযোগী হয়ে উঠতে পারেন। এমনটা ঘটলে এবং এতে অন্য সহকর্মীদের ওপর কাজের চাপ বেড়ে গেলে কর্মক্ষেত্রে অসন্তোষ দেখা দিতে পারে।
জল্পনা-কল্পনা যদি এমন পর্যায়ে পৌঁছায়, যে পাত্র-পাত্রীর কোনো একজন সম্পর্কটিকে ‘সামনে এগোনোর সিঁড়ি’ হিসেবে দেখছেন, তাহলে বিপর্যয় নেমে আসার আশঙ্কা নিশ্চিত বলেই সতর্ক করছেন সালভাজ্জিও। এ ক্ষেত্রে যে প্রশ্নগুলো সামনে চলে আসতে পারে তা হল, স্থানীয় ব্যক্তি কি এ সম্পর্ক থেকে আর্থিক সুবিধা, পদোন্নতি বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব লাভের চেষ্টা করছেন?
এসব প্রশ্নের উত্তর ‘না’ হলে এবং আপনাদের সম্পর্কটা ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়ে থাকলে আপনি অফিসের অসন্তোষ কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করতে পারেন। তবে অবশ্যই নিশ্চিত করুন কোনোভাবেই যেন আপনার দায়িত্বে কোনো অবহেলা না হয়। সহকর্মী এবং বসকে কখনোই বলবেন না যে আপনি আগের মতোই কঠোর পরিশ্রম করছেন, সেটা কাজে দেখিয়ে দিন।
সম্পর্ক গোপন করবেন না। মনোবিজ্ঞানী সালভাজ্জিও আরও বলেছেন, ‘গোপনীয়তা ফাঁস হয়ে গেলে (যা প্রায়শই ঘটে) আপনার বস দু’ভাবে প্রতারিত হওয়ার আঘাত পেতে পারেন। প্রথমত, আপনি তাঁর উপদেশ মানেননি। দ্বিতীয়ত, আপনি আপনার বসকে এটুকুও বিশ্বাস করেন না যে তাঁর কাছে এটা প্রকাশ করতে পারেন।’