বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » বিষাক্ত মদে মরছে মানুষ

বিষাক্ত মদে মরছে মানুষ 

121842_bangladesh_pratidin_alkohol

গত দুই দিনে বিষাক্ত মদপানে অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা ও ঢাকার বাইরের এসব ঘটনা ভাবিয়ে তুলেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন সংস্থাকে। কয়েকটি ঘটনায় তারা ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করে দিয়েছে।

রবিবার রাতে বগুড়ার পুরান বগুড়া, ভবেরবাজার, কাটনারপাড়া ও ফুলবাড়ীতে পৃথক ঘটনায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় অসুস্থ হয়েছেন আরও চারজন। মারা যাওয়া ওই ছয়জন হলেন- বগুড়া শহরের চারমাথা ভবেরবাজার এলাকার হোটেল ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন (৫৫), শহরের তিনমাথা পুরান বগুড়া এলাকার রাজমিস্ত্রি রমজান আলী (৬০), সুমন রবিদাস (৩৫), শহরের কাটনারপাড়া এলাকার শ্রমিক সাজু মিয়া (৫৫), বাবুর্চি মোজাহার আলী (৭০), ফুলবাড়ী এলাকার শ্রমিক পলাশ (৩৫), রামনাথ রবিদাস (৪৫) ও প্রেমনাথ রবিদাস (৫০)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শহরের কালীতলা এলাকায় রবিবার রাতে রেকটিফায়েড স্পিরিট-জাতীয় অ্যালকোহল পান করেন কাটনারপাড়া এলাকার সাজু, মোজাহার, রঞ্জু ও ফুলবাড়ী এলাকার আবদুল জলিল। রাতে বাড়ি ফিরে চারজনই অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর মধ্যে রঞ্জু ছাড়া তিনজন নিজ নিজ বাড়িতে মারা যান। বিষাক্ত মদপানে একই দিন সকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি পাবলিক রিলেশন এজেন্সির দুই কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- শিহাব জহির ও মীর কায়সার।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ওই দুজনসহ আরও কয়েকজন গাজীপুরের একটি রিসোর্টে যান। সেখান থেকে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন তারা। অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হলে দুজন মারা যান। গতকাল সকালে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এই তিনজনের মধ্যে জহিরের মৃত্যুর ঘটনায় কাফরুল থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিমুজ্জামান। গাজীপুরের ওই রিসোর্টে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিজ্ঞাপণী সংস্থা ফোরথপিআরের ৪৩ জন কর্মী নিজেরাই একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। প্রতি চার বছরে একবার এ ধরনের একটি আয়োজন করেন তারা। সেখানে তারা মদপানের পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে ঢাকার কোনো বারে মদ না পেয়ে তারা গাজীপুরে গিয়ে স্থানীয় একজনকে দিয়ে মদ কিনে আনান। মদ খেয়ে ঢাকায় ফেরার পথে গাড়িতেই অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর সকালে দুজন মারা যান। এ ছাড়া অসুস্থ অবস্থায় সাতজনকে রাজধানীর কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) মোহাম্মদ আহসানুল জব্বার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ঘটনাগুলো আমাদের নজরে এসেছে। আমরা তো মদ আমদানি করি না। আমরা শুধু লাইসেন্স দিই। তবে মারা যাওয়ার ঘটনায় খতিয়ে দেখা হচ্ছে যে মদগুলো কাদের কাছ থেকে কেনা হয়েছে।’ এদিকে মদপানে রাজধানীতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ জানায়, শুক্রবার বন্ধুদের সঙ্গে ইউল্যাবের ওই ছাত্রী উত্তরার একটি রেস্তোরাঁয় যান। সেখানে অসুস্থতা বোধ করলে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় বন্ধুর বাসায়। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় শনিবার তাকে রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার মৃত্যু হয় তার। মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল লতিফ জানান, মারা যাওয়া ওই ছাত্রীসহ পাঁচজন শুক্রবার উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরে ব্যাম্বুশুট নামে একটি রেস্তোরাঁয় যান। সেখানে তারা মদ পান করেন। এরপর ওই ছাত্রীসহ তার আরেক বন্ধু আরাফাতও অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আনোয়ার খান মডার্নে মেয়েটির মৃত্যু হয়। এদিকে আরাফাতও অসুস্থ হয়ে শুক্রবারই সিটি হাসপাতালে মারা যান। তবে পুলিশ ওই খবর জানতে পারে গতকাল। মারা যাওয়া মেয়েটির বাবা থানায় মামলা করেছেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেছেন, তার মেয়েকে তাফসীরের বাসায় নিয়ে ‘ধর্ষণ করে’ তার ছেলেবন্ধু রায়হান।

জানা গেছে, গত বছর ২৮ মে দিনাজপুরের বিরামপুর ও রংপুরের শ্যামপুর এলাকায় বিষাক্ত মদপানে ১১ জনের মৃত্যু হয়। এদের মধ্যে আটজনই ছিলেন দিনাজপুরের।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone