আজ পবিত্র শবেমেরাজ

আজ ২২ মার্চ দিবাগত রাত পবিত্র শবেমেরাজ।এই মহিমান্বিত রাতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আরশে আজিমে যান। এ কারণেই হিজরি রজব মাসের ২৬ তারিখের রাতটি মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত মহিমাপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ।মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) নবুওয়ত লাভের একাদশ বর্ষে ২৬ রজব দিবাগত রাতে সৃষ্টিজগতের আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই ঘটনা সংঘটিত হয়। আরবি ভাষায় মেরাজ অর্থ হচ্ছে সিঁড়ি। আর ফার্সি ভাষায় এর অর্থ ঊর্ধ্ব জগতে আরোহণ।হাদিস ও সাহাবিদের বর্ণনা অনুযায়ী, মেরাজের রাতে ফেরেশতা জিবরাইল (আ.) রাসুল (সা.) নিয়ে কাবা শরিফের হাতিমে যান। জমজমের পানিতে অজুর পর বোরাক নামক বাহনে জেরুজালেমের বায়তুল মুকাদ্দাসে গিয়ে নামাজ আদায় করেন। এরপর প্রথম আকাশে পৌঁছান মহানবী (সা.)। সেখানেহযরত আদম (আ.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এভাবে সাত আকাশ পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে সাক্ষাৎ করেন হযরত ঈসা (আ.), হযরত ইয়াহইয়া (আ.), হযরত ইদ্রিস (আ.), হযরত হারুন (আ.), হযরত মুসা (আ.) এবং হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর সঙ্গে।সপ্তম আকাশ থেকে সিদরাতুল মুনতাহায় গমন করেন মহানবী (সা.)। সেখান থেকে আরশে আজিম যান। এক ধনুক দূরত্ব থেকে আল্লাহর সঙ্গে কথোপকথন হয়। মিরাজ থেকে আল্লাহর রসুল উম্মতে মোহাম্মদির জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে পৃথিবীতে আসেন।পৃথিবীতে ফিরে রাসুল (সা.) পুরো ঘটনা হযরত আবু বকর (রা.)-এর কাছে বর্ণনা করেন। মক্কার কাফেররা রাসুল (সা.) মেরাজের ঘটনাকে অবিশ্বাস করলেও তিনি নিঃসংশয়ে তা বিশ্বাস করেন। রাসুল (সা.) আবু বকর (রা.) কে সিদ্দিকি বা বিশ্বাসী উপাধি দেন।ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে পবিত্র এ রাতটি ‘শবেমিরাজ’ হিসেবে পালন করে থাকেন। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, জিকির আজকার, নফল নামাজ, মসজিদ, মাদ্রাসা-খানকা ও বাড়িতে মিলাদ এবং গুনাহ মাফের জন্য আল্লাহর দরবারে রোনাজারি করে থাকেন। প্রতি বছর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পবিত্র শবেমিরাজ উপলক্ষে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ‘লাইলাতুল মিরাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক ওয়াজ ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে এবার ওয়াজ মাহফিল বা আনুষ্ঠানিক কোনো কর্মসূচি পালিত হচ্ছে না। তবে নামাজের পর উপস্থিত মুসল্লিদের নিয়ে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত হবে। কেউ চাইলে ইবাদতও করতে পারবেন। মসজিদ খোলা থাকবে।