মঞ্চে মন্ত্রীর হাতে ধূমপান
নিজস্ব প্রতিবেদক : এ বছরের পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান চলছে। এতে প্রধান অতিথি সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলী। তিনিসহ অতিথিরা মঞ্চে বসা। তবে মন্ত্রী অন্য সবার চেয়ে আলাদা। কারণ, মন্ত্রীর হাতে সিগারেট। বক্তব্য দেওয়ার আগে মঞ্চে বসেই ধূমপান করলেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী।
আজ সোমবার সিলেটের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ চত্বরে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনায় ঘটে এ ঘটনা।
কলেজ সূত্র জানায়, বেলা তিনটার দিকে মন্ত্রী মঞ্চে ওঠেন। তাঁর পাশেই বসেছিলেন অনুষ্ঠানের সভাপতি বিজিবি সিলেট সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো. জামাল মাহমুদ সিদ্দিক। মঞ্চে অতিথি ছিলেন মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মিজানুর রহমান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি রুহুল আনাম ও বিজিবি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফয়জুল হক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশেষ অতিথিদের বক্তব্য চলছিল। প্রধান অতিথি বক্তব্য দেওয়ার আগে মন্ত্রী ধূমপান শুরু করেন। প্রধান অতিথির আসনে বসেই মন্ত্রীর ধূমপানের ঘটনা দেখে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। কিন্তু মন্ত্রীকে কেউ এ ব্যাপারে কোনো কিছু বলেননি। ধূমপান শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেওয়ার নাম ঘোষণা হলেও একটু পরে মন্ত্রী বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে থাকা একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক প্রথম আলোকে বলেন, ‘মন্ত্রী ধূমপানের ঘটনায় শুধু মঞ্চ নয়, মঞ্চের সামনে থাকা আমন্ত্রিত অতিথিরা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন।’
ধূমপানের বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রীকে কেউ কিছু বলেওনি—বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি এই আক্ষেপ জানিয়ে অপর এক অভিভাবক বলেন, ‘জনসমাগমপূর্ণ স্থানে প্রকাশ্যে সিগারেট খাওয়া আইনত নিষিদ্ধ। দেখে মনে হয়েছে, মন্ত্রীকে এ ব্যাপারে কেউ কিছু বললেই তিনি মানতেন। কিন্তু কেউ কিছু না বলায় মন্ত্রী অনায়াসে ধূমপান শেষ করে বক্তব্য দেন।’
যোগাযোগ করা হলে বিজিবি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফয়জুল হক এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তাঁর কোনো মতামত সংবাদমাধ্যমে ব্যক্ত করা অনুচিত বলে তিনি জানান। মঞ্চে বসে ধূমপানের ব্যাপারে মন্ত্রীকে কিছু বলা হলো না কেন, এর জবাবে অধ্যক্ষ বলেন, ‘উনি (মন্ত্রী) একজন ফ্রিডম ফাইটার। ভালো লোক। তবে সিগারেট খাওয়ার বিষয়টি বিব্রতকর হলেও অনুষ্ঠানে তাঁর উপস্থিতি সত্যিকার অর্থেই শিক্ষার্থীদের জন্য প্রেরণাদায়ক ছিল।’
সমাজকল্যাণমন্ত্রীর বক্তব্য জানতে রাতে তাঁর ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও বন্ধ পাওয়া গেছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী যা বললেন
মন্ত্রী হওয়ার পর আজ বিজিবি স্কুল অ্যান্ড কলেজের ওই অনুষ্ঠানটি ছিল সিলেটে প্রথম কোনো অনুষ্ঠান। এ জন্য শিক্ষার্থীও অভিভাবকদের তাঁকে নিয়ে ঔত্সুক্য ছিল। বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, ‘সুশিক্ষায় শিক্ষিত না হলে কখনো ভালো মানুষ হওয়া যায় না। ভালো মানুষ হতে হলে অনেক কষ্ট করতে হয়। সুশৃঙ্খল জীবন গঠনের পাশাপাশি পড়াশোনায় মনোযোগী হতে হয়। মা-বাবা ও শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হয়। কেননা তাদেরকে ভালোবাসা নিজের দেশকে ভালোবাসার সমান।’