বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|শনিবার, মে ৪, ২০২৪
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » বিবিধ » ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন এ বছর শেষ হচ্ছে না

ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন এ বছর শেষ হচ্ছে না 

ral ai

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেনের মহাসড়ক প্রকল্পের কাজ চলতি বছর শেষ হওয়ার সম্ভাবনা কম। এটি ছিল সরকারের গত মেয়াদে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রকল্প।

অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণে এটা পিছিয়ে যাচ্ছে। প্রকল্পের প্রধান ঠিকাদার চীনা প্রতিষ্ঠান বলেছে, নির্মাণ কাজের মূল মওসুমে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সূত্র জানায়, সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন লিমিটেড যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প অফিসকে তাদের তিনশ’ কোটি ডলারের লোকশানের কথা জানিয়ে দিয়েছে। তারা মূল মওসুমের যে বাকি এক মাস সময় রয়েছে সে সময়েও কাজ বন্ধ রেখেছে।

সূত্র জানায়, মূল মওসুমের অল্প যে কয়দিন সময় রয়েছে তাতে তারা কাজ শুরু করছে না আরও লোকশানের আশংকায়।

ঢাকা-চট্টগ্রাম ১৯৩ কিলামিটার মহাসড়ক ৭০ শতাংশ প্রশস্ত করে চার লেনে উন্নীত করার কাজ পায় চীনা কোম্পানীটি ২০১০ সালে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা।

প্রকল্প কর্মকর্তারা জানান, গত বছর ফেব্রুয়ারী থেকেই কোম্পানীটি কাজে অনিয়মিত ছিল। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও বৃষ্টিপূর্ণ আবহাওয়াকেই এজন্য দায়ী করা হচ্ছে। কাজ শেষ করার মেয়াদ ২০১২ থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর কারণেও ক্ষতি হচ্ছে বলে জানানো হয়। নির্মাণ সামগ্রীর সংকটের কারণেও জটিলতা দেখা দিয়েছে।

সূত্র মতে চীনা কোম্পানী কাজ শুরু করতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে, কারণ তারা নির্মাণ সামগ্রী নির্মাণস্থলে আনতে খুব কম সময় পাবে।

প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট একজন ঠিকাদার জানান, পাথর, বালিসহ নির্মাণসামগ্রীর চাহিদাও বেড়ে গেছে যে কারণে দামও বেড়েছে। গত দু-তিন মাস ধরে সারাদেশেই রাস্তা নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। মহাসড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ থাকার কারণেও নির্মাণসামগ্রী যথাসময়ে পৌছানো যায়নি। তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে চার লেনের এই মহাসড়কের কাজ শেষ করা সম্ভব নয়।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, আমরা চলতি মূল মওসুম এরই মধ্যে হারিয়েছি। গত মূল মওসুমেও ক্ষতি হয় কিছু রাজনৈতিক কারণ ও বৃষ্টি মওসুম আগে ভাগে শুরু হওয়ায়। এ অবস্থায় মাত্র একটি মওসুম কাজে লাগিয়ে ডিসেম্বরের মধ্যে এর কাজ শেষ করা সম্ভব নয়।

এদিকে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিষয়টি চীনের রাষ্ট্রদূতের কাছে তুলে ধরেন এবং কোন রকম বিলম্ব ছাড়াই কাজ শুরু করতে তার সহায়তা কামনা করেন। রাষ্ট্রদূত তার সাথে দেখা করতে গেলে তিনি এই আহ্বান জানান।

সূত্র জানায়, চীনের রাষ্ট্রদূতও প্রকল্পে বিলম্ব ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে ব্যাপক লোকশানের বিষয়টি তুলে ধরেন। রাষ্ট্রদূত বিষয়টি নিয়ে চীনা কোম্পানীর সাথে আলোচনার আশ্বাস দেন। চীনা কোম্পানীকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়টিও মন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূতের আলোচনায় উঠে আসে বলে জানা গেছে।

রাজধানী ঢাকার সাথে দেশের প্রধান বন্দর নগরী চট্টগ্রামের সাথে সংযোগ স্থাপনকারী এই মহাসড়কে যানবাহন বেড়ে যাওয়ায় তা দুই লেন থেকে চার লেনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। কিন্তু প্রকল্পটি শুরু থেকেই বালি সরবরাহ ও তহবিল বরাদ্দে সংকটের কারণে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে।

কর্মকর্তাদের রেকর্ড অনুযায়ী ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পের মাত্র ৪০ শতাংশ কাজ হয়েছে। গত জুন পর্যন্ত ১৯৩ কিলোমিটার সড়কের মাত্র ২০ কিলোমিটারে বিটুমিনের কাজ হয়েছে।

প্রকল্পটি তিনবার সংশোধন করা হয়েছে। কাজের মেয়াদ ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। বাজেট ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা করা হয়েছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ এই মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার জন্য চীনের সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন লিমিটেড এবং বাংলাদেশের রেজা কন্সট্রাকশন ও তাহের ব্রাদার্সকে দায়িত্ব দেয়। সাতটি প্যাকেজের মাধ্যমে ৭০ শতাংশ কাজ চীনা কোম্পানীর করার কথা। তিনটি প্যাকেজের মাধ্যমে বাকি কাজ করবে বাংলাদেশী কোম্পানী দু’টি।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone