বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » প্রযুক্তি » মোবাইল ব্যবহারের ক্ষতিগুলো

মোবাইল ব্যবহারের ক্ষতিগুলো 

প্রযুক্তি ডেস্কঃ  স্নায়ুতন্ত্রের উপর মোবাইল ফোনের ক্ষতি নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। সবচেয়ে বড় দুটি সমীক্ষা ইণ্টারফোন স্টাডি ও হার্ডেল রিসার্চ গ্রূপ। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, দিনে দেড় ঘণ্টা বা তার বেশি সময় মোবাইল ফোনে কথা বললে ব্রেনের উপর তার খারাপ প্রভাব পড়ে। দশ বছর ধরে মোবাইল ব্যবহার করলে মস্তিষ্ক কোষের অস্বাভাবিক রকমের বৃ‌দ্ধি হতে পারে। যা থেকে পরবর্তীকালে গ্লাইওমা (সব থেকে পরিচিত ব্রেন টিউমার) ও ব্রেন ক্যানসারের আশঙ্কা থাকে।

গবেষণায় প্রথম জানা যায়, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি রেডিয়েশনের প্রভাবে মস্তিষ্কের ব্লাড-ব্রেন বেরিয়ার (রক্ত ও মস্তিষ্ক কোষের মধ্যে অর্ধভেদ্য পর্দা) লিক করে। ফলে রক্তের বিষাক্ত পদার্থ এই পর্দা ভেদ করে মস্তিষ্কে পৌঁছে যায়। রেডিও ফ্রিকোয়েন্সিতে মস্তিষ্কের কোষের ক্ষতি হয়। ৩০ মিনিটের বেশি মোবাইলে কথা বললে মস্তিষ্কের কাজের ক্ষমতা কমে যায়। মস্তিষ্কের মধ্যে রক্তপ্রবাহেও প্রভাব ফেলে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি। সবচেয়ে বড় ক্ষতি হচেছ নতুন প্রজন্মের। অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারের জন্য স্মৃতিশক্তি কমছে কমবয়সিদের।

mb

ক্ষতি বেশি থ্রি-জিতে
শৈশব থেকে বয়ঃসন্ধির সময় মাথার খুলি (স্কাল) অনেক পাতলা হয়। মাথাও আকারে অনেক ছোট হয়। ২০ বছর বয়স পর্যন্ত দ্রূত মস্তিষ্কের বৃ‌দ্ধি হতে থাকে। এই বয়সে মস্তিষ্কের কলা-কোষের সংবেদনশীলতাও বেশি থাকে। ফলে এই সময় মোবাইল ব্যবহারে মস্তিষ্কের ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। ‘থ্রি জি’ মোবাইল ফোনে এই ক্ষতির মাত্রা অনেকটাই বেশি।

ব্রেন টিউমার ও ব্রেন ক্যান্সার
মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে মস্তিষ্কে গ্লাইওমা ও অ্যাকুইস্টিক নিউরোমা’ টিউমার হয়। অ্যাকুইস্টিক নিউরোমা’ সাধারণত মাথার এক পাশে হয়। এই টিউমার তুলনায় কম ক্ষতিকর। যদিও কখনও কখনও এর কারণে জীবনহানি হতে পারে। গ্লাইওমা টিউমার ব্রেন ও স্পাইনাল কর্ডে হয়। এই টিউমারে মৃত্যু হতে পারে কারণ এর কোষগুলি ম্যালিগন্যাণ্ট। অ্যাকুইস্টিক নিউরোমায় আক্রান্ত রোগীর জীবনের মেয়াদ এক থেকে তিন বছর। যাঁরা দীর্ঘ সময় মোবাইল ফোনে কথা বলেন তাঁদের মস্তিষ্কে টেম্পোরাল লোব টিউমার প্রবণ হয়ে যায়। কুড়ি পেরনোর আগে থেকেই যাঁরা মোবাইল বা কর্ডলেস ফোন ব্যবহার করেন তাঁদের এই অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই বেশি। মোবাইল ফোনের ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক ফিল্ডের রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির প্রধান লক্ষ্য মস্তিষ্ক কোষ। মস্তিষ্কের পিটুইটারি গ্ল্যান্ডের পাশাপাশি থাইরয়েড গ্ল্যান্ড, স্টেম সেল, ত্বক, মুখ, প্যারোটিড গ্ল্যান্ড, রক্ত কোষ, লিম্ফ নোড, স্তন, চোখেও ক্যানসার হতে পারে।

থাইরয়েড গ্রন্থিতে ক্যান্সার
পিটুইটারি গ্ল্যান্ডে ক্যানসারের ফলে তা থেকে গুরুত্বপূর্ণ হরমোন ক্ষরণ বিঘ্নিত হয়। যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় দেহের বৃ‌দ্ধি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ ব্যাহত হয়। গলায় থাইরয়েড গ্ল্যান্ড থাকে। কানের পরেই মোবাইলের রেডিও ফ্রিকোয়েন্সিতে থাইরয়েড গ্ল্যান্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দেখা গিয়েছে মোবাইল ফোন ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই থাইরয়েড গ্র‌ন্থিতে ক্যান্সারের প্রবণতা বেড়েছে। বিশেষ ধরনের ত্বক কোষ দিয়ে শুরু হয়ে মস্তিষ্কে মেলানোমা (ক্যানসারের) আক্রান্তের সংখ্যাও মোবাইল ফোন ব্যবহারের সঙ্গে বেড়েছে। বিতর্ক থাকলেও সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, স্টেম সেল ক্যানসারে আক্রান্ত ২৯ জনের মধ্যে ১১জনই মোবাইল ফোন অত্যধিক ব্যবহার করেন।

বাড়ছে গর্ভপাত
অত্যধিক মোবাইলের ব্যবহারে শুক্রাণুর ক্ষতি, পুরুষের বন্ধ্যাত্ব, মহিলাদের গর্ভপাতের সম্ভাবনা বাড়ে। শিশুদের ক্যানসার, ঘুমের সমস্যা, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, আত্মহত্যার প্রবণতা, হূদরোগ, শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি কমে যাওয়া, আরথ্রাইটিস, শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া ও ত্বকের সমস্যাও হতে পারে। প্রভাব পড়ে ক্রোমোজোমের উপর। যার ফলে প্রজননের ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি রেডিয়েশন সিঙ্গল ও ডাবল-স্ট্র্যন্ড ডিএনএকে ভেঙে দেয়। এছাড়াও মোবাইলের রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আমাদের নার্ভাস সিস্টেমের উপর এমন ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে যার ফলে স্নায়ুতন্ত্রে পরিবর্তনের পাশাপাশি কোষের মৃত্যু ঘটে। অনেক সময় ক্ষতিগ্রস্ত কোষ ক্যান্সারের কারণও হয়।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone