চলন্ত বিমানে পাইলটের খোঁজ
অনলাইন ডেস্ক : ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের বিমানটি তখন আইওয়ার দেস ময়নেস থেকে ডেনভারের পথে। মাটি থেকে ৩০ হাজার ফুট উঁচুতে।
হঠাৎ ককপিট থেকে ঘোষণা যাত্রীদের মধ্যে কোন ডাক্তার বা নার্স আছেন কিনা? কিন্তু কেন এমন ঘোষণা?
তবে ঘোষণা শুনে বিন্দুমাত্র দেরী করেননি যাত্রীদের মধ্যে থাকা পেশায় নার্স লিন্ডা আলওয়েস।
যাত্রীদের মধ্যে তখন গুঞ্জন, কার কী হলো! এর পরেই যেন বোমা ফাটালেন বিমানকর্মীরা, জানালেন বিমান চালক নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
উদ্বেগের আরও কিছু মুহূর্ত পার করে তারা শুনতে পেলেন দ্বিতীয় ঘোষণাটি। যা শুনে ভয়ে অস্থির হয়ে যান অনেক যাত্রীই।
লাউডস্পিকারে এবার তাদের উদ্দেশে প্রশ্ন : ‘কেউ কি বিমান চালাতে পারেন?’
এবার যেন যাত্রীদের ভয় আর আতঙ্কের ষোল কলা পূর্ন হল। পরস্পর চাহনির মাধ্যমে সকলেই একে অন্যকে বোঝাতে চেষ্টা করলেন এ যাত্রা বেঁচে ফিরতে পারব তো ?
ইউনাইটেড এয়ার যাত্রীদের এধরনের আতঙ্ক আর ভয়ের শিহরণ মাখা সময় কাটানোর ঘটনাটি দিন পনেরো আগে ঘটলেও প্রকাশ্যে এসেছে গতকাল।
কিন্তু কী ঘটেছিল সে দিন?
প্রশ্নটির উত্তর মিলেছে সেই নার্স লিন্ডার কাছ থেকে। বিমানটি ওড়ার ২০ মিনিটের মধ্যেই নাটকের শুরু। লিন্ডার ভাষায় ‘ককপিটে ঢুকে দেখলাম পাইলট ঝুঁকে পড়ে রয়েছেন নিজের আসনে। বিড় বিড় করে অসংলগ্ন কথা বলছেন। কিন্তু ওঠার ক্ষমতা নেই।’
তিনি বুঝতে পারেন, পাইলটের হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক নয়। তার পরেই বোঝেন, সম্ভবত মাথায় রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছে নয়তো হৃদরোগে আক্রান্ত বিমানচালক। বিমানে ছিলেন আরও একজন নার্স, অ্যামি সোরেনসন। তিনিও এগিয়ে আসেন। আরও কয়েকজন যাত্রীও সাহায্য করেন ককপিট থেকে পাইলটকে বের করে আনতে। এর পরে হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক করার চেষ্টা শুরু হয়।
বিমানের দায়িত্ব নেন সহকারী চালক। লিন্ডার মাথায় শুধু একটা চিন্তা পাক খাচ্ছিল। ঠিকমতো নামা যাবে তো? তাই এক ফাঁকে মহিলা বিমানকর্মীর কাছে জানতে চান, ‘আপনারা তো জানেন কী ভাবে অবতরণ করতে হবে?’ ওই কর্মী তাকে অভয় দেন।
লিন্ডার কথায়, ‘আর চিন্তা রইল না। আমি পাইলটকে সুস্থ করার কাজে মন দিলাম।’
শেষ পর্যন্ত অবশ্য নির্বিঘ্নে বিমান নামান সহ-চালক। তবে ডেনভারে নয়। নামতে হয় নেব্রাস্কার ওমাহার বিমানবন্দরে। টারম্যাকে ততক্ষণে প্রধান চালকের চিকিৎসার জন্য পৌঁছে গিয়েছেন চিকিৎসক দল।
ওমাহায় যাত্রীদের রাতে থাকার বন্দোবস্ত করা হয়। পরদিন ডেনভার যাওয়ার বিমানে পাঠানো হয় তাদের।