বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Wednesday, December 11, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » আর্ন্তজাতিক » সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় তহবিল-ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ

সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় তহবিল-ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ 

1

সৌদি আরবের যুবরাজ এবং দেশটির ডি-ফ্যাক্টো নেতা মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় তহবিল ও ক্ষমতা অপব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বৈশ্বিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

বার্তা সংস্থাটি এএফপি জানিয়েছে, নিউইয়র্কভিত্তিক সংস্থাটির ৯৩ পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদনে এ অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রতিবেদনের বিশদ বিবরণে বলা হয়েছে, ২০১৭ সাল থেকে চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের নামে সৌদির ভিন্ন মতাবলম্বী ব্যবসায়ী এবং ধনকুবেরদের কোম্পানি ও সম্পত্তি জব্দ করছেন সৌদি যুবরাজ। ওই বছরই নিজ পিতা বাদশাহ সালমান বিন আবদুলাজিজ আল সৌদের কাছ থেকে রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতা গ্রহণ করেন তিনি।

দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের নামে সৌদির ব্যবসায়ী ও ধনকুবেরদের কোম্পানি-সম্পত্তি জব্দ করছেন মোহাম্মদ বিন সালমান, পরে সেসব রাষ্ট্রীয় তহবিল পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডে (পিআইএফ) অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

এতে করে স্বাভাবিকভাবেই ফুলে-ফেঁপে উঠেছে পিআইএফের সম্পদের পরিমাণ। এক দশক আগে যেখানে এই তহবিলের সম্পদের পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৪০০ কোটি ডলার, সেখানে বর্তমানে এটির সম্পদের পরিমাণ পৌঁছেছে ৯২ হাজার ৫০০ কোটি ডলার।

প্রসঙ্গত, পদাধিকার বলে পিআইএফের সার্বিক নিয়ন্ত্রণ রয়েছে সৌদি যুবরাজের হাতে। এ তহবিলের অর্থ কোন খাতে কীভাবে ব্যয় হবে—সেই সম্পর্কেও তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

এইচআরডব্লিউয়ের প্রতিবেদনে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, পিআইএফের মাধ্যমে সৌদি যুবরাজ রাষ্ট্রের অর্থনীতিতে ব্যাপকভাবে নিজের প্রভাব বিস্তার করেছেন, যা অভূতপূর্ব। এর আগে কখনো কোনো শাসক দেশের অর্থনীতিতে এত প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি। তবে, দেশের অর্থনীতিতে যুবরাজ মোহাম্মদের এই পরিমাণ প্রভাবশালী হয়ে ওঠা শেষ পর্যন্ত সৌদির জনগণের কোনো উপকারে আসবে কিনা তা নিয়ে ঘোর সংশয় রয়েছে।

৩৯ বছর বয়সী সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও তুলেছে এইচআরডব্লিউ। বুধবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিআইএফের আওতাধীন বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিকদের অধিক সময় কাজ করতে বাধ্য করা, দুর্ব্যবহার ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।

২০১৭ সালে ক্ষমতায় আসার পর জ্বালানি তেলের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে অন্যান্য অর্থনৈতিক খাতকে শক্তিশালী করার ঘোষণা দেন মোহাম্মদ বিন সালমান। সেই সময় তিনি জানান, ২০৩০ সালের মধ্যে পর্যটন, শিক্ষা ও অন্যান্য অর্থনৈতিক খাতকে জ্বালানি তেলের চেয়েও বেশি শক্তিশালী খাত হিসেবে গড়ে তুলতে চায় তার সরকার।

সেই লক্ষ্যে পিআইএফের অধীনে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেওয়া শুরু করে সৌদি সরকার। তবে এসবের মধ্যে সবচেয়ে বড় বা মেগা প্রকল্পের নাম ‘নিওম’। সৌদির মরুভূমির বুকে অত্যাধুনিক নাগরিক পরিষেবা সম্পন্ন একটি সাই-ফাই শহর গড়ে তুলতে চান সৌদি যুবরাজ। সেটিরই নাম ‘নিওম’। এই প্রকল্পটি যুবরাজের ‘স্বপ্নের প্রকল্প’ নামেও পরিচিত।

এইচআরডব্লিউয়ের দাবি, নিওমসহ পিআইএফের বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক শ্রম আইনের ঘোরতর লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে।

এই সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিআইএফের এসব উচ্চাভিলাষী প্রকল্পে যেসব শ্রমিক কাজ করছেন, তাদের প্রায় সবাই অভিবাসী শ্রমিক কিংবা দেশটির গ্রামীণ এলাকাগুলোর গরিব ও কর্মজীবী শ্রেণীভুক্ত মানুষ। তাদেরকে প্রচণ্ড গরমে অধিক সময় কাজ করতে বাধ্য করা, দুর্ব্যবহার করাসহ শ্রম আইনের গুরুতর লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে সৌদি সরকারের বিরুদ্ধে।

প্রতিবেদনে বিদেশি ব্যবসায়ীদের পিআইএফের সঙ্গে কাজ করা বা অংশীদারিত্বে না যাওয়ার পরামর্শও দিয়েছে এইচআরডব্লিউ।

সূত্র : হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone