বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » আর্ন্তজাতিক » আল-আকসায় ইসরায়েলি মন্ত্রীর সফর ঘিরে জেরুজালেমে উত্তেজনা

আল-আকসায় ইসরায়েলি মন্ত্রীর সফর ঘিরে জেরুজালেমে উত্তেজনা 

2151063__People_walk_outside_the_Dome_of_the_Rock_shrine_at_the_Aqsa_mosque_compound_(also_known_as_the_Temple_Mount_complex_to_Jews)_in_Jerusalem_on_January_3,_2023__(Photo_by_AHMAD_GHARABLI_AFP)

ফিলিস্তিনের পূর্ব জেরুজালেমে পবিত্র আল-আকসা মসজিদকে কেন্দ্র করে আবারও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির মসজিদ এলাকায় সফরে যাওয়ার পর এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকারের একজন কট্টর ডানপন্থী হিসেবে পরিচিত বেন-গভির।

ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বেন-গভিরের সফরকে ‘অভূতপূর্ব উসকানি ও সংঘাতের জন্য মারাত্মক হুমকি’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।

বিজ্ঞাপন

ফিলিস্তিনের আরেক অংশ গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রক ‘হামাসের’ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাসেম নাইম গত সপ্তাহে সতর্ক করেছিলেন যে এ ধরনের কোনো ঘটনা হলে সেটি ‘লাল সীমারেখা লঙ্ঘন’ হবে।   হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম ওই সফরকে অপরাধ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আল-আকসা ‘ফিলিস্তিনি, আরব ও ইসলামী’ জায়গা হিসেবেই থাকবে।

মুসলিমদের অন্যতম পবিত্রতম স্থান আল-আকসা মসজিদকে ইহুদিরা ‘টেম্পল মাউন্ট’ হিসেবে অভিহিত করে। তাদের কাছেও এর ধর্মীয় গুরুত্ব রয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে সেখানে অমুসলিমদের যাওয়ার অধিকার স্বীকৃত হলেও প্রার্থনা করার কোনো অধিকার স্বীকার করে না মুসলিমরা। কিন্তু ইসলায়েলি ইহুদিরা ব্যাপারটিকে এখন আর মেনে চলে না। সেখানে ইহুদি প্রার্থনাকারীদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এর ধারাবাহিকতায় আল-আকসায় বেন-গভিরের সফরকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের সংঘাতের আবহ তৈরি হয়।

এ বিষয়ে বেন-গভির বলেন, ‘ইসরায়েলি লোকজনের জন্য টেম্পল মাউন্ট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। আমরা মুসলিম ও খ্রিস্টানদের সেখানে যাওয়ার স্বাধীনতাকে রক্ষা করি। তবে ইহুদিরাও মাউন্টে যাবে। যদি কেউ হুমকি তৈরি করে তাহলে তা শক্ত হাতে মোকাবেলা করা হবে। ’

আল-আকসা ইসলায়েল অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত। এটি মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান।  কিন্তু মসজিদ কম্পাউন্ডটি পরিচালিত হয় জর্দানের ওয়াকফ ইসলামী অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল দ্বারা। তবে এখানে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করে ইসলায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী।

২০২১ সালের মে মাসে আল-আকসায় প্রবেশ নিয়ে সৃষ্ট সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে হামাসের সঙ্গে ১১ দিনব্যাপী যুদ্ধ হয় ইসরায়েলের। পূর্ব জেরুজালেমে ওই সময় ব্যাপক সংঘাত হয়। মূলত মসজিদে ফিলিস্তিনিদের প্রবেশ সীমিত করার চেষ্টা করলে ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠে মানুষ। বেন-গভির ওই সময় পূর্ব জেরুজালেমে তাঁর সমর্থকদের নিয়ে সভা-সমাবেশ করেছিলেন। চরম ডানপন্থী এই নেতা এর আগে বেশ কয়েকবার আল-আকসায় গেছেন। কিন্তু মন্ত্রী হিসেবে এই প্রথম গেছেন এবং তা সেখানে বেশ উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

পবিত্র আল-আকসায় প্রবেশের মাধ্যমে পবিত্রতা নষ্ট করায় বেন-গভিরের নিন্দা করেছে জর্দান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সিনান মাজালি বলেন, এটি ‘উসকানিমূলক পদক্ষেপ’।

বেন-গভিরকে মনে করা হয় নেতানিয়াহুর সরকারের সবচেয়ে কট্টর একজন হিসেবে। সরকারের দায়িত্বশীল পদে তাঁর আসার আগে থেকেই তাঁকে নিয়ে বিস্তর বিতর্ক চলছিল। তিনি আরব-ইসরায়েলিদের দেশছাড়া করতে চান এবং পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনের পক্ষে জোরালো অবস্থান তুলে ধরেন।

বেন-গভির তাঁর ঘরে বারুচ গোল্ডস্টেইনের ছবি ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। গোল্ডস্টেইনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে তিনি ১৯৯৪ সালে ফিলিস্তিনের হেবরনে একটি মসজিদে প্রার্থনারত ২৯ জনকে হত্যা করেছিলেন।

বেন-গভির গত ২৯ ডিসেম্বর মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।   মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠক উপলক্ষে তিনি আল-আকসা সফর করেন।

২০০০ সালে ইসরায়েলের বিরোধী নেতা অ্যারিয়েল শ্যারন আল-আকসা পরিদর্শনের সময় বড় ধরনের উত্তেজনা তৈরি হয়। ওই সময় ফিলিস্তিনিরা তাদের ‘দ্বিতীয় ইন্তিফাদা’ শুরু করে, যা ২০০৫ সাল পর্যন্ত চলেছিল।

বেন-গভিরের সফর নিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সমালোচনা করেছেন দেশটির বিরোধী নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিদ। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘একজন দুর্বল প্রধানমন্ত্রী যখন মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যক্তিকে সবচেয়ে স্পর্শকাতর জায়গায় যাওয়ার সুযোগ করে দিতে বাধ্য হন, তখন এ ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone