বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » খেলা » অচেনা কিরগিজ চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের

অচেনা কিরগিজ চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের 

025855Sports_kalerkantho_pic

ত্রিভুবন বিমানবন্দরে পা দিয়ে সেটিকে আর চেনা যায় না। প্রেতপুরী যেন! ভ্রমণপুরী নেপালের প্রবেশদুয়ারের নীরবতাই কভিড-১৯-এর তাণ্ডবের বিষণ্ন ছবি। লকডাউন শেষে ধীরে ধীরে ফ্লাইট চালু হচ্ছে। তাতেও ইমিগ্রেশনের বেশির ভাগ পয়েন্টই বন্ধ। এমন বাস্তবতায় নেপালে ত্রিদেশীয় ফুটবল টুর্নামেন্ট বিশেষ কিছুই।

নেপালিদের ফুটবলপ্রেম সম্পর্কে যারা জানে তারা জানে কভিড আক্রান্ত এই সময়ে রীতিমতো উৎসবের আয়োজন করতে যাচ্ছে তারা। গত দক্ষিণ এশীয় গেমসেই ফুটবলের গ্যালারিতে জনসমুদ্র দেখা গেছে। স্টেডিয়ামে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। বাইরে বড় পর্দায় খেলা চলেছে, তাতে থমকে গিয়েছিল ওই এলাকার সব কিছু। দশরথের আঙিনায় দাঁড়িয়ে ১৯৯৯ গেমসের স্মৃতিও মনে করছিলেন বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার ইকবাল হোসেন, ‘থ্রো-ইন নেওয়ার জন্য পিছিয়ে দর্শকদের কাছাকাছি যেতে পারছিলাম না, এমন উন্মত্ত হয়ে উঠেছিল তারা।’ সেই নেপালিরা করোনার মাঝে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে কতটা প্রাণ লাগাতে পারেন, আজ থেকেই জানা যাবে সেটি। আয়োজকদের মনে অবশ্য কোনো সংশয় নেই, নইলে সাধারণ গ্যালারির টিকিটের দামই কেন ৭০০ রুপি রাখতে হবে। আজ বাংলাদেশ-কিরগিজস্তান ম্যাচ দিয়ে টুর্নামেন্টের বোধন হচ্ছে। আজকের ম্যাচে যেমনই হোক, নেপালের ম্যাচে অভিষেক রিজাল, কিরন জেমজংদের সমর্থন দিতে মাঠ যে ভরে উঠবেই, আগাম বলে দেওয়া যায়।

আজ বাংলাদেশ-কিরগিজস্তানের ম্যাচটি হচ্ছে একরকম দুই অচেনা দলের লড়াই, খোদ জেমি ডে-ও কিরগিজস্তানের অলিম্পিক দলটি নিয়ে খুব বেশি কিছু জানেন না, ‘ওদের সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য নেই আমার কাছে। এর একটি কারণ দলটি তরুণ। যাদের খুব বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা নেই। এখন একটাই করতে পারি আমরা—নিজেদের খেলায় মনোযোগ রাখা। ম্যাচটি জিততে হলে কী কী করতে হবে তা করা।’ কিরগিজ ম্যানেজার আব্বাস তোরেস ওদিকে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের এই দলটি নিয়ে খুব বেশি ধারণা নেই আমাদের। করোনার আগে ওদের আমরা যেমন দেখেছিলাম, এর পর থেকে দলটি কতটা বদলেছে বলতে পারব না।’ কিরগিজস্তানও তাই নিজেদের পারফরম্যান্সের দিকেই মনোযোগ রাখছে।

সিনিয়র দলের পার্থক্য বিবেচনায় বাংলাদেশের চেয়ে র‌্যাংকিংয়ে ৯০ ধাপ এগিয়ে থাকা দলটির তরুণদেরও অবশ্য টেকনিক্যালি বাংলাদেশিদের চেয়ে এগিয়ে রাখছেন জেমি। তবে খুব বেশি জানাশোনা না থাকলেও তিন দলের টুর্নামেন্টে প্রথম এই ম্যাচটি জিতে দুই দলই যে ফাইনালের পথে এগিয়ে থাকতে চাইছে, তা মানছেন জেমি। দুই দলের সিনিয়র পর্যায়ের হেড টু হেড বলছে কিরগিজরা চার ম্যাচের চারটিই জিতেছে সেই ২০০৭ সালের নেহরু কাপ থেকে। তাদের অনূর্ধ্ব-২৩ দলটিকে হারিয়ে জেমি কিছুটা হলেও তাতে স্বস্তির প্রলেপ দিতে পারেন। আর ব্রিটিশ এই কোচের এবারের নেপাল সফরে ভালো কিছু করার আলাদা অনুপ্রেরণাও তো আছে। কারণ এখানেই সর্বশেষ সফর এসএ গেমস থেকে নতমুখে ফিরতে হয়েছিল তাঁর দলকে। টম সেইন্টফিটের সিনিয়র দলের পর জেমি ডের অলিম্পিক দলও এই টুর্নামেন্টে এসে হারে ভুটানের কাছে, হার ছিল নেপালের বিপক্ষেও, মালদ্বীপের সঙ্গে ড্র। একমাত্র শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ভারতহীন সে আসর থেকে ব্রোঞ্জ নিয়ে ফেরাকে চরম ব্যর্থতা হিসেবেই ধরা হয়েছিল। এশিয়ান গেমসে কাতারকে হারিয়ে যে দল ইতিহাস গড়েছিল, দক্ষিণ এশীয় গেমসে তাদের এমন ছন্নছাড়া চেহারা ভাবতেই পারেননি কেউ।

খেলোয়াড়রা যেন নিজেদের হারিয়ে খুঁজছিলেন। সঙ্গে রেফারির ভুল আর জামাল ভুঁইয়ার লাল কার্ড—কী হয়নি সে আসরে! জেমি তাঁর সেই শিষ্যদের নিয়ে দশরথে আবার। তিনিও নিশ্চয় পুরনো ক্ষতে প্রলেপ লাগিয়ে ফিরতে চাইবেন। জেমি চানও, ‘হ্যাঁ, গত এসএ গেমসে এখানে আমাদের পারফরম্যান্স বেশ হতাশাজনক ছিল। এবার ট্রফি জিততে পারলে তো খুবই ভালো হয়। তবে সামনের দুটি ম্যাচে ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েই বলতে পারব—হ্যাঁ, আমরা পেরেছি।’ আজ অচেনা কিরগিজদের পেরিয়ে যেতে পারলে অনেকটাই নির্ভার হয়ে পরের ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে নামতে পারবে জেমির দল।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone