বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৬, ২০২৪
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » বিডিআর বিদ্রোহ মামলায় হাইকোর্টের অসমাপ্ত রায় পড়া শুরু

বিডিআর বিদ্রোহ মামলায় হাইকোর্টের অসমাপ্ত রায় পড়া শুরু 

2017-11-27_6_522888

রাজধানীর পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে (বর্তমান বিজিবি সদর দপ্তর) সংগঠিত বিদ্রোহে নারকীয় হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় আজ হাইকোর্টে অসমাপ্ত রায় পড়া শুরু হয়েছে।
বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিশেষ বেঞ্চে মামলাটি আজ সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে অসমাপ্ত রায় পড়া শুরু হয়েছে। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার।
দ্বিতীয় দিনের শুরুতে রায়ের পর্যবেক্ষণ দিচ্ছেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার। তার পড়া শেষে রায়ের মূল অংশ পড়বেন বিচারপতি মো. শওকত হোসেন। এর আগে গতকাল রোববার বিকেল ৪টায় প্রথমদিনের মতো রায় পড়া শেষ হয়।
বহুল আলোচিত ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআরের সদর দপ্তর সংগঠিত বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ১৫২ আসামির মৃত্যুদন্ডের অনুমোদন (ডেথ রেফারেন্স) ও সাজা বাতিলে আসামিপক্ষের আপিলের এ রায় দেয়া হচ্ছে। একই আদালতে ডেথ রেফারেন্স ও সাজা বাতিলে আসামিপক্ষের আপিলের রায় ছাড়াও দন্ডিতদের সাজা বৃদ্ধি এবং আসামীদের খালাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে আনা আপিলেরও রায় দিবে।
আসামি সংখ্যার দিক থেকে এটি দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় মামলা। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় ওই হত্যাযজ্ঞে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। এই হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর বিচারিক আদালত রায় দেয়। এ মামলায় আসামি ছিলেন ৮৪৬ জন। সাজা হয় ৫৬৮ জনের। তাঁদের মধ্যে বিচারিক আদালতের রায়ে ১৫২ আসামিকে মৃত্যুদন্ড, ১৬০ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, ২৫৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড হয়েছিল। খালাস পেয়েছিলেন ২৭৮ জন।
রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিতে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। নিরাপত্তা জোরদারে আইন শৃংখলা বাহিনীর বাড়তি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পরিচয় পত্র প্রদর্শন ও যৌক্তিক কারণ ব্যতিত সুপ্রিমকোর্ট অঙ্গনে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে সংগঠিত হত্যাকান্ডে আনা মামলায় দায়ের করা সকল ডেথ রেফারেন্স ও ফৌজদারি আপিলের ওপর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন গত ১৩ এপ্রিল শেষ হয়। এর আগে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ করেন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এ ঘটনায় প্রথমে রাজধানীর লালবাগ থানায় হত্যা এবং বিস্ফোরক আইনে দ’ুটি মামলা হয়। পরে এসব মামলা নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তরিত হয়। মামলায় সিআইডি দীর্ঘ তদন্ত শেষে হত্যা মামলায় ২৩ বেসামরিক ব্যক্তিসহ প্রথমে ৮২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। পরে সম্পূরক অভিযোগপত্রে আরও ২৬ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করায় আসামি দাড়ায় ৮৫০ জনে। এছাড়া বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় ৮০৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় সিআইডি। পরে আরও ২৬ জনকে অভিযুক্ত করে মোট ৮৩৪ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়া হয়। বিচার চলার সময়ে বিডিআরের ডিএডি রহিমসহ চার আসামির মৃত্যু হয়। মামলায় আসামীদের মধ্যে বিএনপি নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা তোরাব আলীরও দন্ড হয়েছে। সাজা ভোগকালীন বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
রক্তাক্ত ওই বিদ্রোহের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী এ বাহিনীর নাম পুনর্গঠন করা হয়। নাম বদলের পর এ বাহিনী এখন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) হিসেবে পরিচিত।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone