বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » সামনে বৈশাখ, মিলছে না ইলিশ

সামনে বৈশাখ, মিলছে না ইলিশ 

রোকন উদ্দিন : আর মাত্র কটা দিন। ঘনিয়ে আসছে বাংলা নববর্ষের প্রথম সকাল। বৈশাখকে বরণ করতে ইলিশের স্বাদ আর গন্ধ চাই-ই-চাই। রাজধানীর আজিমপুরের বাসিন্দা তাবিবুর রহমান চাকরি করেন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে। পরিবারের সকল সদস্যের বায়না পহেলা বৈশাখে ইলিশ খাবে। এ বায়না যেন প্রতিবছরই। তাই আগে-ভাগেই মাছ কেনার চেষ্টা করছেন। কিন্তু মিলছে না ইলিশ। আশেপাশের বাজারে দু’একটি ইলিশ মিললেও দাম যেন আকাশ ছোঁয়া। বাজারে মাছের দাম শুনে তিনি ভীষণ হতাশ। কারণ সাধ ও সাধ্যের মধ্যে কোনোই সঙ্গতি খুঁজে পাচ্ছিলেন তাবিবুর রহমান। রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, তাবিবুরের মতো অনেক ক্রেতার সাধ থাকলেও মাছের রাজা ইলিশ কেনার সাধ্য নেই। অনেকে আবার বাজার ঘুরে বড় ইলিশ দেখে শেষমেশ ছোট্ট ইলিশও যেন সোনার হরিণ।এদিকে পাড়া মহল্লায় ফেরী করেও ইলিশ বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। ফলে নিম্নবিত্ত এমনকি মধ্যবিত্তদের জন্য এবার ইলিশের স্বাদ নেওয়া বেশ কঠিনই হয়ে পড়েছে।

ELISH-1428130713

বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখেই রাজধানীর বাজারে ইলিশের দাম বাড়তে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। তারা বলছেন, দাম বেড়ে যাওয়ার ভয়ে অনেকেই এখন ইলিশ কিনে রাখছেন। তা ছাড়া এ মৌসুমে ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ থাকায় আমদানিও কম। এতে দাম বাড়ছে।মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে ইলিশ মাছের সঙ্কট রয়েছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হলে সামনে সঙ্কট আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে মৎস্য ব্যবসায়ীরা ইলিশের মজুদ বাড়িয়ে দিয়েছেন। ওই ইলিশগুলো বাজারে ছাড়া হলে দাম কিছুটা কমার সম্ভাবনা রয়েছে।মতিঝিলের এজিবি কলোনি বাজার ঘুরে দেখা গেল, মাছের বাজারে ইলিশের দেখা মেলা বড় দায়। যা আছে তার দাম কেজি প্রতি ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের হালি সাড়ে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা।এবার রাজধানীর সব বাজারেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। পাইকারি বাজারগুলোয় ইলিশের সরবরাহ কম থাকায় এবারও দাম এত চড়া বলে খুচরা ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে পহেলা বৈশাখ ঘিরে অতি মুনাফা পকেটে তুলছেন ব্যবসায়ীরা।রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নিউমার্কেট, মোহাম্মদপুর, কাঁঠালবাগানসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৮০০ গ্রাম ওজনের এক হালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭ হাজার ৫০০ থেকে ৮ হাজার টাকায়। মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারে বড় আকারের ইলিশের দাম হাঁকা হচ্ছে ৩ হাজার টাকা কেজি।একটু কম দামে ইলিশ কেনার আশায় রাজধানীর অদূরে কাঁচপুর শিল্পাঞ্চল থেকে যাত্রাবাড়ী পাইকারী বাজারে এসেছেন মো. লতিফ মিয়া। বাজার ঘুরে হতাশ এ ক্রেতা। দামে কোনো পরিবর্তন নেই মালিবাগ রেলগেটের মাছবাজারে।বৈশাখবরণ করতে পান্তা-ইলিশ না খেলে যেন আনুষ্ঠানিকতা অপূর্ণই থেকে যায়। তাইতো বাজারে এসেছেন গৃহিনী তাসলিমা বেগম। ইলিশের দাম শুনে হতাশ তাসলিমা  বললেন, ‘দামের ব্যাপারে তারা (ব্যবসায়ীরা) স্বৈরাচারিতার পরিচয় দিচ্ছে। সরকার কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। এটাতো কোনো স্বাধীন দেশের ব্যবসানীতি হতে পারে না।’আড়তদার ইদ্রিস আলী বলেন, এ মৌসুমে জাটকা নিধনে নিষেধাজ্ঞা থাকে। তারপর আবার মাছের সংকট। বিপরীতে সব অঞ্চলেই ইলিশের ব্যাপক চাহিদা থাকায় দাম বাড়ছেই। বাজার মনিটিরিংয়ের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কনজুমার অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যবসায়ীরা বেশি মুনাফার আশায় ইলিশ মজুদ করে রাখছেন। তারা কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করছেন। এতে দেশের সাধারণ মানুষ বৈশাখে পান্তা-ইলিশ খেতে পারবে না বলে মনে হচ্ছে।

 

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone