বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » বিশেষ সংবাদ » বছর জুড়েই বিতর্কিত ছিল নির্বাচন কমিশন

বছর জুড়েই বিতর্কিত ছিল নির্বাচন কমিশন 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ    গত বছরের জুলাইয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনীতে সরকারের সুপারিশ বহালের মধ্য দিয়েই বিতর্কের জন্ম দেয় কাজী রকিব উদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে গঠিত কমিশন।

অন্যদিকে বিএনপিকে ছাড়াই দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল, ভোট গ্রহণের আগেই ১৫৩ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা, উপজেলা নির্বাচনে নজিরবিহীন ভোট জালিয়াতি, কেন্দ্র দখল ও সহিংসতায় প্রাণহানী এবং নির্বাচন চলাকালে সিইসির বিদেশ ভ্রমণ, ভোটকেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ, ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গা, হালনাগাদে মহিলা ভোটার কমসহ বিভিন্ন কারণে বছর জুড়েই বিতর্কিত ছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ec

গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ ও সাধারণ মানুষের বিরোধিতার কারণেই গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২-এর ৯১ই ধারাটি বাতিলের সিদ্ধান্ত থেকে কমিশন সরে এলেও ক্ষমতাসীন দলের সুপারিশে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নির্বাচনে না রাখা ও আরপিওর ১২/জে ধারা বাতিল করা হয়। যেটিতে রাজনৈতিক দলে একটানা তিন বছর সদস্য পদ না থাকলে কোনো ব্যক্তি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না’। এই বিধানটি বাতিলের মাধ্যমেই অরাজনৈতিক-ব্যবসায়ী ও কালো টাকার মালিকদের নির্বাচনে অংশ নেয়ার পথ আরও সুগম করে ইসি।

৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন:
বিকর্তের শুরুটা ২০১৩ সালে হলেও ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আয়োজনে মধ্য দিয়েই বিতর্কের চরম পর্যায়ে পৌঁছায় ইসি। সে সময় বিরোধী দল বিএনপিকে ছাড়াই ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আয়োজন করে। যদিও নির্বাচনের আগ থেকেই নির্বাচন কমিশনের উপর অনাস্থা, মাজা ভাঙা ও মেরুদণ্ডহীন ও সরকারের আজ্ঞাবহ বলেও দাবি করে আসছিল তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। একই সঙ্গে নির্দলীয় সরকারের নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল দলটি।

জাতীয় নির্বাচনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় অর্ধেকেরও বেশি এমপিকে নির্বাচিত করা হয়। সব আসনে নির্বাচন না হলেও সহিংসতার মাত্রা ছিল ভয়ানক।

বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে না গিয়েই ৫ জানুয়ারি নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণা দেয়। সরকারি ও বিরোধী দলের মুখোমুখি অবস্থানে ভোটগ্রহণের দিন ২৪ জনের প্রাণহানী ঘটে। আহত হয় প্রায় ৫ শতাধিক নেতাকর্মী।এর মধ্যে ৪ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্য রয়েছে। বাকিরা বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মী। সবচেয়ে বেশি নিহত হয় দিনাজপুর, নীলফামারী ও ঠাকুরগাঁও জেলায়।এসব জেলায় ৪ জন করে মোট ১২ জন নিহত হন। এছাড়া রংপুর ও ফেনীতে দুজন করে, লালমনিরহাট, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, পিরোজপুর, নওগাঁ, নোয়াখালী ও গাইবান্ধায় ১ জন করে নিহত হন।

তবে নির্বাচন কমিশন বরাবরই দাবি করে আসছে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করতেই তাদের এ নির্বাচনের আয়োজন করা। তবে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে এতে তারা ব্যথিত। দেশের একটি বড় দল নির্বাচন প্রতিরোধের ঘোষণা দেয়ায় সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।

১৪৭টি আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হলেও ভোটার উপস্থিতি নিয়ে ছিল প্রশ্ন। বেশির ভাগই ভোটকেন্দ্র ছিল ভোটার শূন্য। তারপরও সন্তোষজনক ভোটার উপস্থিতি দেখানো হয়। অতীতে নির্বাচনের দিন ভোটার উপস্থিতির হার জানিয়ে দেয়ার ইতিহাস থাকলেও এবার ভোটার উপস্থিতির হার নিয়ে গড়িমশি করে নির্বাচন কমিশন।পর দিন নির্বাচন কমিশনের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ভোটার উপস্থিতির হার ছিল ৪০ দশমিক ৫৬ শতাংশ। যা নিয়েও সমালোচনার মুখে পড়ে ইসি। তবে কয়েকটি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংগঠন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানের দাবি ভোটের হার ছিল ১০ শতাংশ। ফেয়ার ইলেকশন মনিটরিং অ্যালায়েন্সের (ফেমা) দাবি ছিল নির্বাচনে ১০ শতাংশেরও কম ভোটার উপস্থিত হয়েছিলেন।

অন্যদিকে একতরফা নির্বাচনে কারণেই দেশের বাইরে থেকে কোনো নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা আসেননি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইউএনডিপি নির্বাচনে ও কমনওয়েলথ, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়াসহ বিভিন্ন সংস্থা সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করার আহ্বানও জানিয়েছিল। ততেও ইসি কর্ণপাত করেনি।

চতুর্থ উপজেলা নির্বাচন:
ব্যাপক সমালোচিত ও বিতর্কিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হওয়ার ১৫ দিনের মাথায় ১৯ জানুয়ারি চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে বিএনপি সমর্থিত পার্থীরা এগিয়ে থাকলেও তৃতীয় দফায় এগিয়ে থাকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা। প্রথম দফায় নির্বাচন কিছুটা শান্তিপূর্ণ হলেও দ্বিতীয় দফায় সহিংসতার মাত্রা বাড়ে। আর তৃতীয় দফায় সেই সহিংসতার মাত্রা চরম পর্যায়ে পৌঁছায়।এ দফায় নির্বাচনের দিনের সহিংসতায় ৩ জন লোক মারা যান। এছাড়া দিনভর চলে জালভোট ও জোরপূর্বক ভোটদানের মহোৎসব। নির্বাচনের দিন আওয়ামী লীগ নেতারা সশস্ত্র মহড়াও চালায়।

চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে সহিংসতায় ৯ জন প্রাণ হারান। এর মধ্যে দ্বিতীয় ধাপে ২ জন, তৃতীয় ধাপে ৩ জন এবং চতুর্থ ধাপে ৪ জন। তবে শেষ দুই ধাপে কেউ নিহত না হলেও কেন্দ্র দখল, জোরপূর্বক ভোট দান, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের এজেন্টদের বের করে দিয়ে ব্যালট পেপারে সিল মারার ঘটনা ঘটে।

সহিংস নির্বাচনের মাঝে সিইসির বিদেশ ভ্রমণ:
চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনে দ্বিতীয় দফা শেষ করেই একমাসের ছুটিতে যুক্তরাষ্ট্রে যান প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ ও কমিশনের ভূমিকা নিয়ে যখন তুমূল আলোচনা চলছে ঠিক সেই মুহূর্তে বিদেশ ভ্রমণ কতটা যৌক্তিক তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষ ও সুশীল সমাজ। সিইসি বিদেশ যাওযার পরে অনুষ্ঠিত তৃতীয় দফায় ভায়াবহ সহিসংসাতর ঘটনা ঘটে। নির্বাচনের দিন ৩ জনের নিহত হন। সিইসির ছুটির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম বলেছিলেন, ‘তিনি ক্লান্ত, তাই তিনি ছুটিতে গেছেন।’

ক্ষমতাসীনদের কাছে অসহায় ইসি:
জাতীয় নির্বাচন ও চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনসহ বিভিন্ন উপ-নির্বাচন শান্তিপুর্ণ পরিবেশে করতে ব্যর্থ হয় ইসি। ভোটকেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের দৌরাত্ম্য ছিল নজীরবিহীন। দলীয় নেতাকর্মীরা কেন্দ্র প্রবেশ করে ব্যালট পেপারের সীল মারার ঘটনা ঘটায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে এমন ঘটনা ঘটলেও তাদের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।

গত ২৬ জুন অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাংসদ শামীম ওসমান আচরণবিধি লঙ্ঘন করে একজন সহকারী পুলিশ সুপারকে (এএসপি-ট্রাফিক) বিভিন্নভাবে হুমকি দেন। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি এর সত্যতা পেলেও কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি ইসি। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের ভোটার করতে সহায়তাকারী ৫১ জন প্রতিনিধি-নির্বাচন কর্মকর্তার নাম নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়। সেই তালিকায় কক্সবাজার-৪ আসের সাংসদ আবদুর রহমান বদির নাম সবার শীর্ষে থাকে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন বদির বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোন ভূমিকা নেননি। দায়সারা চিঠি দিয়ে দায়িত্ব সেরেছেন। এ কাণ্ডে ইসির কর্মকর্তারাই কমিশনের কঠোর সমালোচনা করেছেন।

নির্বাচন নিয়ে এইচটি ইমামের বক্তব্য ও ইসির ভাবমূর্তি:
জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও উপজেলা নির্বাচনে নজিরবিহীন জালিয়াতি ও সহিংসতায়, প্রাণহানির ঘটনায় ইসির ভাবমূর্তি এমনিতে শূন্যের কোটায়। বিভিন্ন সভা-সেমিনারে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়তে হয় ইসিকে। বিভিন্ন মহল থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনের প্রদত্যাগ দাবিও করা হয়। এসব সমালোচনা রেশ কাটতে না কাটতেই নির্বাচন নিয়ে বোমা ফাটান প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম। ইসিকে নতুন করে বিতর্কের মুখে ফেলে দেন তিনি।

সম্প্রতি ছাত্রলীগের একটি অনুষ্ঠানে এইচটি ইমাম বলেন, নির্বাচনের সময় বাংলাদেশ পুলিশ ও প্রশাসনের যে ভূমিকা, নির্বাচনের সময় আমি তো প্রত্যেকটি উপজেলায় কথা বলেছি, সব জায়গায় আমাদের যারা রিক্রুটেড, তাদের সঙ্গে কথা বলে, তাদেরকে দিয়ে মোবাইল কোর্ট করিয়ে আমরা নির্বাচন করেছি। তারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, বুক পেতে দিয়েছে।

হালনাগাদে মহিলা ভোটার কম:
২০১৪ সালের ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে নারী ভোটারদের অন্তর্ভুক্তি আশঙ্কাজনকভাবে কম হয়। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে, অভিভাবকরা বিয়ের আগে মেয়েদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে চায় না। বয়স গোপন রাখার জন্যই তারা এ কৌশল অবলম্বন করে। এছাড়া ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় জন্ম নিবন্ধন কর্ডের প্রয়োজন হয়। জন্ম নিবন্ধন কার্ড সংগ্রহ করা বেশ কষ্টসাধ্য। হয়রানির হাত থেকে রক্ষা পেতেই তারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে অনীহা প্রকাশ করেন। এ কারণেই নাকি ভোটার তালিকা হালনাগাদে নারী ভোটার কম হয়েছে। তবে ঢাকার বাইরে নারী ভোটার কম হলেও রাজধানীতে পুরুষের তুলনায় নারী ভোটার বেশি হয়।

ঝিমিয়ে চলছে ইসির চার প্রকল্প:
দেশের নির্বাচন পদ্ধতি শক্তিশালীকরণ, ইসি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ ও মান্নোয়নসহ জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত সেবা হাতের লাগালে পৌঁছে দিতে ইসির বাস্তবায়নধীন ২০১৪-১৫ অর্থবছরে এডিপিভুক্ত চার প্রকল্প ঝিমিয়ে পড়েছে। গত ৫ মাসে (জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত) চার প্রকল্পে মাত্র চার শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন করতে পেরেছে ইসি। প্রকল্পের এই ধীর গতিতে স্বয়ং ইসির কর্মকর্তারায় অন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা জায়, গত ৫ মাসে নির্বাচন কমিশনের চারটি প্রকল্পে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র চার শতাংশ। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে চার প্রকল্পের অধীনে ৫১২ কোটি ৯৯ লাখ বরাদ্দ দেয় সরকার। এর মধ্যে সরকারি অর্থ তহবিল থেকে দেয়া হয় ৭৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। প্রকল্প সাহায্য ৪৩৪ কোটি টাকা। কিন্তু গত ৫ মাসে এডিপিতে থেকে ব্যয় হয়েছে ৩০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। যা মোট এডিপি বরাদ্দের চার শতাংশ।

বছর জুড়েই এনআইডি সেবায় ভোগান্তি:
২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগে জাতীয় পরিচয়পত্রের গুরুত্ব সম্পর্কে জনগণের মধ্যে খুব একটা ধারণা ছিল না। অনেকটাই দায়সারাভাবেই ভোটারদের অনুপস্থিতিতেই ফরম পূরণ করেছে তথ্য সংগ্রকারীরা। এ কারণে বিভিন্ন ধরনের ভূলভ্রান্তি থেকে যায়। পরে ভুল সংশোধন করতে গিয়ে ভোটারদের পড়তে হয় মহাভোগান্তিতে। জেলা-উপজেলা নির্বাচন অফিসে মাসের পর মাস ধরনা দিয়েও কাজ হয় না। দালালদের খপ্পড়ে পড়ে কখনো গুণতে হয় মোটা অংকের টাকা। শেষমেষ আসতে হয় রাজধানীতে। কিন্তু সেখানেও কাজটি সহজ নয়। পদে পদে হয়রানি, প্রতারণা।

ইসির অলস সময়:
দশম জাতীয় সংসদ ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পর অলস সময় পার করছেন কাজী রকিব উদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বাধীন কমিশন। কমিশনারদের কর্মব্যস্ততা খুব একটা দেখা যায় না। প্রতিদিন অফিসে আসা-যাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ তারা। তবে নির্বাচন শেষে বেশ কয়েকজন কমিশনার বিভিন্ন দেশ ভ্রমণও করেছেন।

বর্তমান সময়ে ইসির কার্য্ক্রম কী? তারা কী করছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বাংলামেইলকে বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাজ দেশব্যাপী। ইসি সচিবালয় সারা বছররেই ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে সময় পার করে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও নির্বাচন হয়। এছাড়া ভবিষ্যতে যে নির্বাচনগুলো হবে তারও প্রস্তুতি নিতে হয়। এছাড়া আইন-বিধি নিয়ে কাজ করতে হয়। এছাড়া নির্বাচনকে টেকনোলজি নির্ভর করতে ইসি কাজ করে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে নির্বাচন কমিশন অনেক কাজ করছে। কমিশন বসে নেই।

ভোটার তালিকায় বিদেশি নাগরিক:
ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গাসহ বিদেশি নাগরিকরা যেন কোনোভাবে প্রবেশ করতে না সে ব্যাপারে বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিলেও বার বার ব্যর্থ হয়েছে ইসি। ভোটার তালিকায় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও মিয়ানমায়ের নাগরিকরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহয়তায় ভোটার হচ্ছেন। এ ঘটনায় স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ৩৮৯ জনের একটি তালিকায় ইসিতে পাঠানো হয়েছে। যাতে বর্তমানে ভোটার আছেন এবং ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করেন এমন রোহিঙ্গার নাম রয়েছে।

ইসির মূল্যায়ন:
২০১৪ সালে ইসির সার্বিক মূল্যায়ণের ব্যাপারে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে. (অব.) জাবেদ আলী  বলেন, এ বছরে অনেকগুলো নির্বাচন ছিল। কমিশনের উপরের অর্পিত দায়িত্বগুলো আমরা পালন করেছি। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছে।

তিনি বলেন, কমিশন সব সময় সচেষ্ট ছিল, সংবিধান সমুন্নত রেখে যেন দায়িত্ব শেষ করা হয়। ইসি সেটা পেরেছে।

তিনি বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গোলযোগের কারণে কেউ কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কেউ প্রাণ হারিয়েছেন, কেউ বা আহতও হয়েছেন। আমরা এ কারণে ব্যথিত। নির্বাচন কমিশন আশা করে, সব রাজনৈতিক দল ও জনগণ তাদের সহযোগিতা করবে।

এ বছরে কোনো সফলতা দেখেছেন কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেদের ইতিহাসে নির্বাচন প্রতিহত ও প্রতিরোধ কোনো ঘটনা দেখেনি। কিন্তু আমরা এমন পরিস্থিতর সম্মুখীন হয়েছি। এ কারণে অনেক কিছু মোকাবেলা করতে হয়েছে। বছরটা চ্যালেঞ্জিংই ছিল।

সূত্র : বাংলামেইল

 

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone