খালেদার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হতে পারে
প্রধান প্রতিবেদক : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার এক বক্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের দাবি, সাতক্ষীরায় ভারতীয় বাহিনীর সহায়তায় অভিযান চালানোয় খালেদা জিয়া যে বক্তব্য রেখেছেন, তা রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল।
সোমবার খালেদা জিয়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে সাতক্ষীরায় যৌথবাহিনীর অভিযান নিয়ে বলেন, আপনারা দেখেছেন, কিভাবে মানুষকে নির্যাতন করছে। আদৌ যৌথবাহিনী ছিল কি না- সেটা নিয়ে মানুষের মনে সন্দেহ আছে। বাংলাদেশের পুলিশ এবং অন্য বাহিনী এত নিষ্ঠুর হবে, এটা নিয়ে মানুষের সন্দেহ আছে। তাদের কাজকর্ম দেখে মনে হয় না সার্বভৌমত্ব অটুট আছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দাবি করেছেন, খালেদা জিয়ার এ বক্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহমূলক। তিনি খালেদা জিয়াকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে বলেছেন।
সৈয়দ আশরাফ বলেন, দৈনিক ইনকিলাব সাতক্ষীরায় ভারতীয় বাহিনীর সহায়তায় অভিযান পরিচালনার সংবাদ প্রকাশ করে ক্ষমা চাইলেও খালেদা জিয়া নির্লজ্জ মিথ্যাচার করেছেন। তিনি দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে হেয় করেছেন। রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে ঠেলে দেবেন, তা হতে পারে না।
তিনি বলেন, কেউ দেশের সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে ছিনিমিনি খেললে, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হয়ে উঠলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সৈয়দ আশরাফ বলেন, ইনকিলাব ক্ষমা চেয়ে বলল খবরটি সঠিক নয় আর খালেদা জিয়া বলেন, সাতক্ষীরায় যৌথবাহিনীর সঙ্গে ভারতীয় বাহিনী অভিযান চালিয়েছে। এটা কি কোনো দায়িত্বশীল নেত্রীর উক্তি? তিনি কি প্রতিবেশীর সঙ্গে যুদ্ধ বাধাতে চান? তিনি খালেদা জিয়াকে ইনকিলাবের মতো ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে বলেন।
এদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, খালেদা জিয়ার বক্তব্যে কোনো রাষ্ট্রদ্রোহ হয়নি। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, সরকার যা করছে তার কোনো যুক্তি নেই। নেতাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। কিছু দিন আগে তারা বিরোধী দলীয় নেত্রীকে বালুর ট্রাক দিয়ে আটকে দেয়। এখন দেশে বাকশালের মতো অবস্থা। রাস্তায় লাশ পাওয়া যায়। বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের রক্ষী বাহিনীর মতো নির্যাতন করছে।
ক্ষমা না চাইলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সৈয়দ আশরাফের ব্যবস্থা নেয়া মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি সম্পূর্ণ মিথ্যাচার করছেন। আমি জানি না ওই সময় তিনি কোন অবস্থায় ছিলেন, কি অবস্থায় কথা বলেছেন তিনি।
জানা গেছে, খালেদা জিয়ার বক্তব্য সরকার সহজভাবে নেয়নি। তার বক্তব্যকে পর্যালোচনা করে সরকারের সিদ্ধান্তেই সৈয়দ আশরাফ মঙ্গলবার খালেদা জিয়াকে বক্তব্য প্রত্যাহার, নয়তো ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন। খালেদা জিয়ার বক্তব্য পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে। দেখা হচ্ছে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে কি না।
এ নিয়ে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান বলেন, খালেদা জিয়ার মতো একজন নেত্রীর এ ধরনের কথা দায়িত্বহীন এবং বেআইনি। সরকার চাইলে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করতে পারে। তবে কোনো ব্যক্তি মামলা করতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে।